চন্দননগর স্ট্র্যান্ড। নিজস্ব চিত্র
জনহীন হুগলির চন্দননগর স্ট্র্যান্ড। বিকেল হতেই ভিড় জমা এই চত্বরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আর অভ্যস্ত পায়ের আনাগোনা হচ্ছে না। ভিড় করছেন না নিজস্বীপ্রেমীরা। গঙ্গার ধারের বেঞ্চে বসা আড্ডাও জমছে না আর। বরং সন্ধ্যা হলেই চোখে পড়ছে স্ট্র্যান্ডের অচেনা একটা ছবি। শুনশান হয়ে যাচ্ছে গোটা এলাকা।
রাজ্যের করোনা সংক্রান্ত বিধি নিষেধ মেনেই বন্ধ হয়েছে স্ট্র্যান্ড লাগোয়া খাবারের দোকানগুলি। তবে আড্ডা দেওয়ার বা বাইরে বার হওয়ায় বাধা নেই। নেই বাড়তি কোনও কড়াকড়িও। তবু ভর সন্ধ্যায় চন্দননগর স্ট্র্যান্ডের জনমানবহীন অচেনা ছবি বলে দিচ্ছে, কিছুটা নিজেদের ইচ্ছেতেই ঘরবন্দি হয়েছেন চন্দননগরের মানুষ। করোনা বিধির চেয়ে করোনা ভীতিই রাশ টেনেছে তাঁদের।
অন্য সময়ে এই স্ট্র্যান্ডেই বিকেল থেকে ভিড় জমতে শুরু করে। বেঞ্চের দখল নেয় ছোট ছোট আড্ডার দল। স্ট্যান্ডের সামনে নতুন তৈরি হয়েছে ‘আই লাভ চন্দননগর’ লেখা নিজস্বী তোলার জায়গা। ভিড় জমে সেখানেও। তবে রাজ্যে করোনা বিধির কড়াকড়ির পর থেকে চন্দননগর স্ট্র্যান্ডের সেই চেনা ছবি দেখা যাচ্ছে না। রবীন্দ্র ভবন চত্বর, চন্দননগর সরকারি কলেজ, মহকুমা দফতর, ফরাসি মিউজিয়াম, চার্চ রোড খাঁ খাঁ করছে।
গত বছর মার্চ মাসে লকডাউন ঘোষণার পরও এমন ছবি দেখা গিয়েছিল স্ট্র্যান্ডের। তবে তখন সরকারি নির্দেশ আর কড়াকড়ি ছিল। এ বার তেমন বাধা না থাকলেও সাধারণ মানুষ কিছুটা ভয় পেয়েই নিজেরা ঘরবন্দি হয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। চন্দননগর হাটখোলার বাসিন্দা অমিত ঘোষ বললেন, ‘‘আমার গয়নার দোকান আছে হাটখোলায়। রাতে দোকান বন্ধ করে বন্ধুরা স্ট্র্যান্ডে বসে আড্ডা মারি। বন্ধুরা যে যার কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে সারা দিন। রাতে সবার সঙ্গে দেখা হয় এই স্ট্র্যান্ডেই। কিন্তু এখন সেই আড্ডা বন্ধ।’’
চন্দননগর বাগবাজারের বাসিন্দা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সারা দিনই স্ট্যান্ডে লোকজনের আনাগোনা লেগে থাকে। কিন্তু করোনার ভয়ে আর কেউ বাড়ি থেকে বার হতে চাইছেন না।’’