বিভিন্ন অভিযোগে একশো দিনের কাজ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস এবং সড়ক যোজনার বরাদ্দ আটকে দিয়েছিল কেন্দ্র। ফাইল চিত্র।
অন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পে টাকার জোগান বন্ধ রাখার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যোগ্য উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির প্রস্তাবও দীর্ঘ কাল আটকে রেখেছিল কেন্দ্র। সহযোগিতার বাধা সরানোর সাম্প্রতিক আবহে, প্রায় আট মাস পরে ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আবার কাজ শুরু করার অনুমতি পেল রাজ্য সরকার। সব মিলিয়ে এই কাজে অর্থের পরিমাণ ৮২০০ কোটি টাকা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ না-পাওয়ায় রাজ্যের পক্ষে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করা কার্যত অসম্ভব ছিল। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পের বাধা কাটায় নবান্ন কিছুটা স্বস্তিতে। যদিও একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বরাদ্দ এখনও আটকে আছে।
বিভিন্ন অভিযোগে একশো দিনের কাজ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস এবং সড়ক যোজনার বরাদ্দ আটকে দিয়েছিল কেন্দ্র। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনা হয় দফায় দফায়। বরাদ্দের জোগানে জট কাটাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই সূত্র ধরে গত ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তার পরে আধিকারিক স্তরেও আলোচনা হয়েছে। কয়েক দিন আগেই কেন্দ্র জানিয়েছিল, বন্ধ থাকা প্রকল্পগুলির টাকা ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রথমে সড়ক যোজনা এবং এখন আবাস যোজনায় ছাড়পত্র দিল তারা।
প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ১১ লক্ষ ৩৪ হাজার উপভোক্তার বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা সরকারের। সেই তালিকাই আটকে ছিল এত দিন। তবে কেন্দ্র এ বার তা মঞ্জুর করলেও এই তালিকায় নতুন কোনও নাম যুক্ত করা যাবে না। উপভোক্তাদের তালিকা অনুযায়ী দফায় দফায় কাজ শেষ করে তথ্য পাঠাবে রাজ্য। তার ভিত্তিতে কেন্দ্র বরাদ্দ টাকা দেবে কিস্তিতে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, “গত মার্চেই কাজের অনুমোদন আসার কথা ছিল। কিন্তু তা আটকে ছিল। এত দিনে সেই অুমোদন পাওয়া গিয়েছে। ফলে জেলা ও ব্লক স্তরে প্রকল্পের কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে আর বাধা থাকছে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আমাদের গত বৈঠকেও কেন্দ্র জানিয়েছিল, রাজ্যের পদক্ষেপে তারা সন্তুষ্ট।”
এই প্রকল্পে রাজ্যের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল নামবদল। তা ছাড়া উপভোক্তাদের তালিকা ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় দল একাধিক বার পশ্চিমবঙ্গে ঘুরে গিয়ে বেশ কিছু সংশোধনের প্রস্তাব পাঠায় রাজ্যের কাছে। প্রকল্পের মূল নাম ফিরিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনমূলক বাকি সব পদক্ষেপই করেছে রাজ্য। এমনকি, গত বছরের শেষে একটি প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপভোক্তার তালিকা ত্রুটিমুক্ত রাখার ব্যাপারে প্রশাসনিক কর্তাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
তবে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বরাদ্দ-জট এখনও না-কাটায় রাজ্যের অস্বস্তি পুরোপুরি কাটেনি। “ওই প্রকল্পে মজুরির টাকা এখনও আটকে থাকায় গরিব মানুষের খুব অসুবিধা হচ্ছে,” বলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।