মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রশিক্ষণ। চাকরি নিয়ে শেষ ছিল না দুর্ভাবনার। অবশেষে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়ে দিল, সময়সীমার মধ্যে প্রশিক্ষণ না-হলেও পার্শ্ব শিক্ষকদের দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক প্রশিক্ষণের সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে আপাতত দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। চাকরির অনিশ্চয়তাও থাকছে না।’’
পর্ষদ-প্রধানের আশ্বাসে কিছুটা স্বস্তি পেলেও পার্শ্ব শিক্ষকেরা কিন্তু পুরোপুরি দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না। কারণ, কেন্দ্র প্রশিক্ষণের সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে জানালেও সভাপতি একই সঙ্গে জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা পর্ষদের হাতে পৌঁছয়নি।
২০০৫ সালে রাজ্যে ওই শিক্ষকদের নিয়োগ শুরু হয়। সেই প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১০ সালে। সেই সময় কেন্দ্রের শিক্ষার সাংবিধানিক অধিকার আইন ২০১০-এর ২৩ (১) ধারায় বলা হয়, পাঁচ বছরের মধ্যে সব শিক্ষকের ন্যূনতম পেশাগত শিক্ষণ-যোগ্যতা অর্জন করে নিতে হবে। কোনও শিক্ষকের যদি তা না-থাকে, তাঁকে দিয়ে সেটা করিয়ে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। ৩১ মার্চ ছিল সেই শিক্ষণের শেষ দিন।
২০১৪ সালেও পার্শ্ব শিক্ষকদের কোনও প্রশিক্ষণ না-হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য পার্শ্ব শিক্ষক সমন্বয় সমিতির সদস্যেরা। তার পরে শিক্ষামন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ডিএলএড প্রশিক্ষণ করানোর কথা বলেন।
দূরশিক্ষার পাঠ্যক্রমে প্রশিক্ষণ নিতে হলে এনসিটিই-র কাছে মডিউল পাঠাতে হয় রাজ্যকে। কোন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হবে, কে শংসাপত্র দেবে, কী ভাবে কত দিন প্রশিক্ষণ চলবে ইত্যাদি তথ্য দিতে হয়। মডিউলে সন্তুষ্ট হলে ছাড়পত্র দেয় এনসিটিই। এ ক্ষেত্রে রােজ্যরই কোনও খামতি রয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও পর্ষদের সভাপতি মানিকবাবু বলেন, ‘‘আমরা এনসিটিই-তে চার বছর আগে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, এমন দৃষ্টান্তও আছে। ওখানকার ছাড়পত্র দিতে দেরি হচ্ছে বলেই প্রশিক্ষণ হচ্ছে না।’’
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পার্শ্ব শিক্ষক সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোমিউল ইসলাম শেখ। তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও আমাদের প্রশিক্ষণটুকু হল না। রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের প্রশিক্ষণের বিযয়টি যেন তাঁরা বিবেচনা করেন।’’