ফাইল চিত্র।
অর্থ কমিশনের মঞ্চেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কমিশনকে জানান, চতুর্দশ অর্থ কমিশন কেন্দ্রীয় কর থেকে রাজ্যের প্রাপ্য ৩২% থেকে বাড়িয়ে ৪২% করেছিল। কিন্তু তা আসলে লোক দেখানো। কারণ, কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে বহু প্রকল্প পুনর্গঠন করে। ৩৮টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। ফলে ওই প্রকল্পগুলির বকেয়া কাজের টাকার দায় এসে পড়ে রাজ্যের ঘাড়ে। ৫৮টি প্রকল্পে রাজ্যের খরচের ভাগ বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্র।
মুখ্যমন্ত্রী কমিশনকে বলেন, ‘‘আমরা বারবার বলেছি, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু করা হোক। কারণ, নতুন প্রকল্প এলেই তার আর্থিক ভার রাজ্যের ঘাড়ে এসে পড়ে। কিন্তু সে সব কিছুই শোনা হয়নি।’’ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে রাজ্যের আর্জি, ভবিষ্যতে কেন্দ্র যাতে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না-করে কোনও প্রকল্প ঘোষণা করতে না-পারে, সে ব্যাপারে তারা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করুক। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় করের নায্য পাওনা থেকেও রাজ্যকে বারবার বঞ্চিত করা হয়েছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ মমতার। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সেস-সারচার্জের ভাগও রাজ্যগুলিকে দেওয়া হোক। বর্তমানে সেস-সারচার্জের ভাগ রাজ্যগুলি পায় না। তাই কেন্দ্র অনেক সময়ই কর কমিয়ে সেস বা সারচার্জ বসিয়ে দেয়। সাম্প্রতিক অতীতে পেট্রল-ডিজেলের উপরে প্রায় ৮ টাকা কেন্দ্রীয় কর কমিয়ে সমপরিমাণ টাকা সেস হিসেবে ধার্য করেছে।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার আরও কয়েকটি উদাহরণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কমিশনকে জানান, ইউপিএ সরকার পিছিয়ে পড়া এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে রাজ্যের জন্য ৮৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। মোদী সরকার এই খাতে ২৬৫০ কোটি টাকা দেয়নি। তা ছাড়া, চতুর্দশ অর্থ কমিশন কেন্দ্রীয় বরাদ্দের পুরোটাই গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খরচের সুপারিশ করায় জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির আর্থিক কাঠামো দুর্বল হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের দাবি
• কেন্দ্রীয় করের প্রাপ্য ৪২ থেকে ৫০% করা
• কেন্দ্রীয় সেস ও সারচার্জেরও অংশ
• পাঁচ বছরে ৯০,১৩৬ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি অনুদান
• পরিমাঠামো ক্ষেত্রে ১, ৪৬, ৬৯৩ কোটির অনুদান
• পুরসভা ও পঞ্চায়েতের জন্য ৬৪,৩১৯ কোটি টাকা
• প্রশাসনিক সংস্কার ও অভিনব ভাবনার প্রকল্পে ২৫,৮৩০ কোটি