ছবি:পিটিআই
যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়া লকডাউন ভেঙে পথে নামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পাশাপাশি, তাদের গাইডলাইনের বাইরে গিয়ে কোনও পরিষেবাকে লকডাউন থেকে ছাড় দিলে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে বলেও রাজ্যগুলি সতর্ক করেছে মন্ত্রক।
বৃহস্পতিবার সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা বলেছেন, লকডাউন নিয়ে গত ২৪ মার্চ জারি করা নির্দেশিকায় স্পষ্টই বলা হয়েছিল যে, কেউ লকডাউন না-মানলে তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর ৫১ থেকে ৫০ ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি)-র ১৮৮ ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সমস্ত ধারা অনুযায়ী লকডাউন ভাঙার কারণ হিসেবে মিথ্যে দাবি করলে দু’বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা হতে পারে। লকডাউন বলবতে বাধা দেওয়ার শাস্তি দু’বছর পর্যন্ত জেল। এই শাস্তির বিষয়টি জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রচার করার জন্য রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেছেন ভাল্লা।
এর আগে মুখ্যসচিবদের লেখা আরও একটি চিঠিতে ভাল্লা বলেছেন, কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গাইডলাইনে উল্লেখ করা নেই এমন কিছু পরিষেবাকে লকডাউনের আওতার বাইরে রেখেছে বলে কেন্দ্রের নজরে এসেছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে নির্দেশিকা জারি করেছে তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার জন্য রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সচিব ও রাজ্যের মুখ্যসচিবদের জানিয়েছেন, লকডাউন নির্দেশ নিয়ে নিজেদের মতো করে কোনও ‘ব্যাখ্যা’ কোনও রাজ্য বা মন্ত্রক করতে পারবে না। যদি কোনও ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন হয়, বা নির্দেশের ব্যাখ্যা প্রয়োজন হয়, তা কেবলমাত্র জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত কার্যনির্বাহী সমিতির কাছে পাঠাতে হবে। লকডাউন নিয়ে রাজ্যগুলি কোনও নতুন নির্দেশ বা ইতিমধ্যেই জারি করা কোনও নির্দেশের অদলবদল করতে চাইলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই অনেক রাজ্য ছাড়পত্রের তালিকা দীর্ঘ করতে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গও লকডাউন নির্দেশিকার বাইরে গিয়ে দিনে চার ঘণ্টা মিষ্টির দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের অবশ্য বক্তব্য, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ দুধ নষ্ট হওয়া ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় কিছু মন্ত্রকও নাকি লকডাউন নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে বেশ কিছু ছাড় দিয়েছে। সব মিলিয়ে লকডাউনের উদ্দেশ্য লঘু হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি।