Mamata Banerjee

Water project: বঙ্গের জলস্বপ্নে বাড়তি টাকার আশ্বাস কেন্দ্রের

কোষাগারে প্রবল চাপ সত্ত্বেও চলতি অর্থবর্ষে এই খাতে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কিসান বিকাশ থেকে স্বাস্থ্যের মতো নানা প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের মধ্যেও ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যেতে চাইছে কেন্দ্র। চলতি আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিক (জানুয়ারি-মার্চ) এখনও বাকি। গত বছরের তুলনায় এ বার এখনও পর্যন্ত বঙ্গের জলস্বপ্ন প্রকল্পের অগ্রগতি দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে বলে নবান্নের দাবি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই গতির কারণেই প্রকল্পে টাকার সমস্যা হবে না বলে কেন্দ্রের আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে তৃণমূল সরকার বরাবরই অভিযোগমুখর। তার মধ্যে এই আশ্বাস তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই।

Advertisement

গ্রামীণ এলাকার ঘরে ঘরে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জলস্বপ্ন প্রকল্পে (কেন্দ্রের জলজীবন মিশনের আওতায়) কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ বরাদ্দ থাকে। কোষাগারে প্রবল চাপ সত্ত্বেও চলতি অর্থবর্ষে এই খাতে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। সমানুপাতিক হারে টাকা দিয়েছে কেন্দ্রও। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তাদের অনেকে জানাচ্ছেন, যে-গতিতে প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে, তাতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত অর্থ পেতে সমস্যা হবে না। দফতরের এক কর্তা বলেন, “ধরেই নেওয়া যায়, টাকার জন্য প্রকল্প আটকে যাবে না।”

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তৃতীয় বার শপথ নেওয়ার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জলস্বপ্ন প্রকল্পের উপরে নজরদারি চালাচ্ছেন। তাঁর নির্দেশে জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলেছেন মুখ্যসচিবও। এই অবস্থায় প্রকল্পের গতি বাড়ছে। ‘‘আগে মাসিক জলসংযোগ দেওয়ার নিরিখে বাংলা দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় পিছনের সারিতে থাকত। তবে এখন প্রায় প্রতি মাসে অনেক রাজ্যের থেকে এগিয়ে থাকে বঙ্গ,’’ বলেন পুলকবাবু।

Advertisement

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বিশ্লেষণ, মুখ্যমন্ত্রীর শেষ দফার দিল্লি সফরের পরে একটা পরিস্থিতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাজ্যের আসন্ন শিল্প সম্মেলনে আহ্বান জানিয়েছেন মমতা। তা গ্রহণও করেছেন মোদী। আবার মোদী-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে এসে বৈঠকও করেছেন। কেন্দ্রের ‘উদারতা’-র পিছনে এই প্রেক্ষাপটটাই কাজ করছে কি না, জল্পনা চলছে তা নিয়েও। তবে প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ খোঁজা যুক্তিযুক্ত হবে না। আসলে জলস্বপ্ন প্রকল্পে বাংলার অগ্রগতিতে আশ্বস্ত হয়েই গতি আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে বাড়তি বরাদ্দের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। কারণ, ২০২৪ সালের মধ্যে গোটা দেশে জলজীবন মিশনের কাজ শেষ করার তাগিদ আছে কেন্দ্রেরও।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০২০ সালে কমবেশি ১২ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ দিয়েছে রাজ্য। কেন্দ্রের তথ্যই বলছে, মাঝখানে ভোটের ব্যস্ততা সত্ত্বেও চলতি অর্থবর্ষে মে থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ লক্ষ ১০ হাজার ৫৯০ জলের সংযোগ দেওয়া গিয়েছে। শুধু নভেম্বরেই প্রায় ২.৪০ লক্ষ জলের সংযোগ দিয়ে অন্যান্য রাজ্যের থেকে এগিয়ে আছে বাংলা। অনেকটা পিছনে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক। এই দিক থেকে উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাতের মতো রাজ্যও পিছিয়ে আছে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন যে-গতিতে জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে, তা উত্তরপ্রদেশকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের আনুষঙ্গিক সব কাজই এগিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। যাতে দরপত্র ডাকা বা সেই ধরনের কোনও কাজে সময় নষ্ট না-হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement