শিশু পাচার নিয়ে তদন্তে দিল্লি থেকে জলপাইগুড়ি এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই সময়ে জেলা প্রশাসন থেকে তাঁদের কোনও সাহায্যই করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা আয়োগের দুই প্রতিনিধি। এ বার তাঁরা এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি নিয়ে দিল্লিতে ডেকে পাঠালেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভকতকে।
আয়োগ সূত্রের খবর, আগামী ২৫ এপ্রিল আয়োগের দফতরে হাজিরা দিতে সমন পাঠানো হয়েছে জেলাশাসককে। রচনা ভকত অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘এমন কোনও সমনের ব্যাপারে জানি না। এলে পরে দেখব।’’
এ বছরের গোড়ায় শিশু পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে যায় উত্তর ২৪ পরগনা ও জলপাইগুড়ি জেলার নাম। তদন্তে নেমে সিআইডি গ্রেফতার করে জলপাইগুড়ির বিমলা শিশুগৃহের চেয়ারপার্সন চন্দনা চক্রবর্তী, বিজেপি যুবনেত্রী জুহি চৌধুরী ও দুই জেলার দুই শিশু সুরক্ষা আধিকারিককে। জুহি চৌধুরীকে সাহায্য করার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের হয় বিজেপি-র রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং কৈলাশ বিজয়বর্গীর বিরুদ্ধেও।
এর পরে শিশুপাচারের অভিযোগ পেয়ে রাজ্যে আসেন আয়োগের দুই সদস্য প্রিয়াঙ্ক কানুনগো ও যশোবন্ত জৈন। কিন্তু অভিযোগ, ওখানকার হোমগুলি থেকে গত পাঁচ বছরে কত বাচ্চা, কোথায় দত্তক দেওয়া হয়েছে এবং কার নির্দেশে— এই সংক্রান্ত নথি চেয়েও তাঁরা পাননি। ফলে দু’দিনের সফরে নিজেদের উদ্যোগে হোম পরিদর্শন করে খালি হাতেই দিল্লি ফেরেন প্রিয়াঙ্করা। পরে দিল্লি থেকেও দু’বার চিঠি পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রগুলি চেয়ে পাঠালেও সে সব এখনও তাঁদের হাতে আসেনি বলে অভিযোগ।
সোমবার প্রিয়াঙ্ক এই কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ির জেলাশাসকে রচনা ভগতকে ২৫ এপ্রিল কাগজপত্র নিয়ে দিল্লিতে আয়োগের অফিসে হাজির থাকতে সমন পাঠানো হয়েছে।’’ কিন্তু, যে সময়ে এই পাচারের ঘটনাগুলো ঘটেছিল বলে অভিযোগ, তখন জেলাশাসক ছিলেন পৃথা সরকার। তিনিই শিশু কল্যাণ সমিতির পরিবর্তে অ্যাড হক কমিটি তৈরি করেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে
সমন না পাঠিয়ে রচনা ভগতকে পাঠানো হল কেন? আয়োগের বক্তব্য, ‘‘তদন্ত তো পরে হবে। আগে কাগজপত্র হাতে পেতে হবে। তাতেই তো লেখা থাকবে কে ওই কমিটি তৈরি করেছিলেন।’’