প্রতীকী ছবি।
চলতি বছরে সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় মুখ পুড়েছিল কেন্দ্রের। সোমবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্কুলশিক্ষা সচিব অনিল স্বরূপ জানালেন, প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আগামী বছর থেকে এই পরীক্ষা হবে সম্পূর্ণ অন্য ভাবে।
প্রশ্ন ফাঁসের বিপত্তি রুখতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব ভি এস ওবেরয়ের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গড়েছিল কেন্দ্র। সেই কমিটি প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোর সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর একাধিক সংস্কারমুখী প্রস্তাব দিয়েছে সিবিএসই বোর্ডকে। কমিটি দেখেছে, এখন প্রশ্নপত্র ছাপা হয় এক জায়গায়। তার পরে তা স্কুলে স্কুলে পাঠানো হয় বা স্কুলের প্রতিনিধি এসে সংগ্রহ করে নিয়ে যান। গোটা ব্যবস্থার মধ্যে একাধিক ফাঁকফোকর রয়েছে। সেই ছিদ্রের সুযোগেই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। গোটা প্রক্রিয়াটি নিশ্ছিদ্র করতে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে কমিটি।
প্রথমত, বাইরে থেকে প্রশ্ন আনার পরিবর্তে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্ন ছাপার সুপারিশ করেছে কমিটি। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে প্রশ্নপত্রের প্রিন্ট আউট বার করে দ্রুত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিলি করতে বলেছে তারা। এতে প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা অনেক কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর জন্য পরীক্ষার দিনগুলিতে সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রিন্টার, কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ ও জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, প্রতিটি প্রশ্নপত্রে ওয়াটার মার্ক স্টিকার লাগানোর সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির বক্তব্য, ওয়াটার মার্কে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের কোড নম্বর লেখার ব্যবস্থা থাকবে। সে-ক্ষেত্রে প্রশ্ন ফাঁস হলে সেই কোড নম্বরের ভিত্তিতেই সহজেই বোঝা যাবে, কোন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ওই প্রশ্নপত্র বেরিয়ে গিয়েছে।
এখন সিবিএসই বোর্ড দ্বাদশে ১৬৮ এবং দশম শ্রেণিতে ৭০টি বিষয়ের উপরে পরীক্ষা নিয়ে থাকে। এত বিষয় থাকায় প্রায় দু’মাস ধরে পরীক্ষা নিতে হয় তাদের। কমিটির রিপোর্টে দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা নেওয়ার বদলে এক মাসের মধ্যে সব পরীক্ষা মিটিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গান, মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের মতো কিছু বিষয় নেন খুব অল্প সংখ্যক ছাত্রছাত্রী। ওই সব বিষয়ের পরীক্ষা বাইরের কেন্দ্রের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট স্কুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করলে সময়ের অপচয় কমবে। ওই সব পরীক্ষা মূল পরীক্ষা শুরুর আগেই সেরে নিতে বলা হয়েছে। কমিটির আশা, এতে মূল পরীক্ষা চার থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে সেরে ফেলা সম্ভব হবে।