যাঁদের কথা ছিল নজরদারির এবং বেনিয়ম দেখলে ব্যবস্থা নেওয়ার, অভিযোগ পেয়েও তাঁরা তা করেননি!
সারদা মামলায় সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)-র বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ এনেছিল সিবিআই। এ বার সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সেবি-র ৩ কর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেবি-রই চেয়ারম্যানের কাছে অনুমতি চাইল সিবিআই। অনুমতি পেলে এঁদের নাম সারদা মামলার পরবর্তী চার্জশিটে উল্লেখ করা হবে। এঁদের গ্রেফতারও করা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
সেবি-র বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আজকের নয়। সিবিআই সূত্রে খবর, ২০০৯ সালে, যখন সারদা সে ভাবে ডালপালা ছড়ায়নি, তখনই একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে রাজ্য পুলিশের কাছে। তদানীন্তন এক আইপিএস অফিসার কলকাতা থেকে সেবি-কে চিঠি লিখে সতর্ক করেন এবং বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সেই চিঠি পরে সিবিআইয়ের হাতে আসে।
তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, সে সময় কলকাতায় সেবি-র অফিসের তিন কর্তার উপরে দায়িত্ব বর্তায় নজরদারির। তাঁরা খোঁজখবরও নিতে শুরু করেন। পরে সিবিআইকে লেখা চিঠিতে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন অভিযোগ করেন, ইস্টবেঙ্গল কর্তা নীতু ওরফে দেবব্রত সরকার সেবি-র বিষয়টি ‘ম্যানেজ’ করার জন্য মাসে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা করে টানা ১৫ মাস সুদীপ্তর থেকে টাকা নেন। পরে নীতুকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তিনি এখন জামিনে মুক্ত।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, নীতুর সঙ্গে যোগাযোগ হয় সেবি-র ওই তিন অফিসারের। সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে সারদা, রোজ ভ্যালি-র বিরুদ্ধে। সেই নজরদারি করার কথা যাঁদের, তাঁরা যদি অভিযোগ পেয়েও চুপ করে বসে থাকেন, ম্যানেজ হয়ে যান, তা হলে তাঁদেরও অপরাধ কম নয়।’’
কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর, সেবি-র ওই তিন অফিসার পদোন্নতি পেয়ে এখন দিল্লিতে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এবং চিফ জেনারেল ম্যানেজার পদে রয়েছেন। এঁদের বিরুদ্ধে পাওয়া যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সেবি-র চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দেবব্রত সরকারের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। যা বলার আমার আইনজীবী আদালতে বলবেন।’’