কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে নিয়ে সিবিআই-রাজ্য টানাপড়েনের মধ্যেই শুক্রবার এক এসপি-র নেতৃত্বে সিবিআইয়ের বিশেষ অফিসারের একটি দল সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ওই তদন্ত সংস্থার দফতরে যোগ দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই সারদা কেলেঙ্কারিতে রাজ্যের ‘সিট’ বা বিশেষ তদন্ত দলের অন্যতম অফিসার রাজীবকে শিলং নিয়ে গিয়ে জেরার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। রাজীবের বিরুদ্ধে সারদা মামলার তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
তদন্তকারীদের কথায়, এক দিকে যেমন সারদা-কাণ্ডে পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে, তেমনই অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদা ও রোজ ভ্যালির সঙ্গে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পের মৌ বা সমঝোতাপত্র সইয়ের বিষয়টিও রয়েছে। ২০১২ সালে কালিম্পংয়ে ডেলো পাহাড়ের বৈঠকে রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু ও সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটন ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য ওই দুই লগ্নি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল বলে তদন্তকারীরা জানান। ওই বৈঠকে কয়েক জন সচিব ও যুগ্মসচিব উপস্থিত ছিলেন। গৌতম ও সুদীপ্তের বয়ান অনুযায়ী কিছু প্রকল্পে লগ্নি সংস্থার তরফে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু লগ্নি সংস্থার বিনিয়োগ করা টাকা রাজ্য সরকারের তরফে ফেরত দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, মাস দুয়েক আগে কয়েক জন প্রশাসনিক কর্তাকে ওই সব চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের কাছ থেকেও কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। লগ্নি সংস্থার সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের যোগসাজশের বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে। সিবিআইয়ের বিশেষ দলই ওই সব প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত প্রশাসনিক কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে, সেই বিষয়েও তদন্ত করবে বিশেষ দল। এক সিবিআই-কর্তা জানান, লগ্নি সংস্থার সঙ্গে ভিআইপি প্রভাবশালীদের যোগসাজশের তদন্তেই এই বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়েছে। দলটির আপাতত ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কলকাতায় কাজ করার কথা। পরে প্রয়োজনে তদন্তের স্বার্থে সময়সীমা বাড়তেও পারে।