R G Kar Hospital Incident

আরজি কর: ‘তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্ত না-হলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব’! চিকিৎসকের দাবি ঘিরে বিতর্ক

সিবিআই সূত্রে দাবি, সূর্যাস্তের পর ময়না তদন্ত এবং ময়না তদন্তের নানা ধোঁয়াশা নিয়ে অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও এ দিন অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে ওই সূত্রের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৬
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাসকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। রবিবার দুপুরে অপূর্ব সিজিও কমপ্লেক্সে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সন্ধ্যায় বেরিয়ে এসে অপূর্ব সাংবাদিকদের বলেন, প্রাক্তন কাউন্সিলর এবং মৃতার কাকা পরিচয় দিয়ে এক অপরিচিত ব্যক্তি তাঁদের দ্রুত ময়না তদন্ত করার জন্য প্রভূত চাপ দিয়েছিলেন।

Advertisement

সিবিআই সূত্রে দাবি, সূর্যাস্তের পর ময়না তদন্ত এবং ময়না তদন্তের নানা ধোঁয়াশা নিয়ে অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও এ দিন অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে ওই সূত্রের দাবি। ময়না তদন্তের সময়ে বা আগে অপূর্বকে কি কেউ বা কারা কোনও নির্দেশ দিয়েছিলেন? দিয়ে থাকলে, সেটি কী? তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, চিকিৎসক পড়ুয়ার খুন, ধর্ষণের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অপূর্ব। অপূর্বর নেতৃত্বে তিন জন চিকিৎসক আর জি করে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পিজিটি চিকিৎসকের দেহের ময়না তদন্ত করেছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের পরে বেরিয়ে এসে অপূর্ব বলেন, ‘‘কাগজপত্র আসতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। নিহত ডাক্তার ছাত্রীর কাকা পরিচয় দিয়ে এক জন আমাদের বলেছিলেন, তাড়াতাড়ি ময়না তদন্ত না-হলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব। যত দূর মনে পড়ছে, তিনি নিজেকে প্রাক্তন কাউন্সিলর বলে পরিচয় দেন। হয়তো ডাক্তার ছাত্রীর এলাকার কাউন্সিলর। এখন ওঁর নামটা আমার মনে নেই।

সিবিআই সূত্রে দাবি, মৃতদেহ দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের সুযোগ না এড়াতেই সূর্যাস্তের পরে ময়না তদন্ত সেরে মৃতদেহ দাহ করা হয় বলে অভিযোগ। তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মা দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি করেছিলেন। পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনে সাড়া দেননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

তদন্তকারীদের কথায়, সেমিনার হল থেকে ময়নাতদন্ত—সব কিছু নিয়েই নানা প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে কিছু খটকা দূর করতেই সচেষ্ট তদন্তকারীরা। শনিবারের পর রবিবারও সন্দীপ ঘনিষ্ঠ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের প্রাক্তন রেসিডেন্ট চিকিৎসক (বর্তমানে বরখাস্ত) বিরূপাক্ষ বিশ্বাস এবং আর জি করের জুনিয়র ডাক্তার সৌরভ পালকে সকাল থেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। অভীক দে-কেও আজ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালান।

এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে আসেন বিরূপাক্ষ। ঘন্টাখানেক পরে আসেন সৌরভ। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, সেমিনার হলের থিকথিকে ভিড় এবং ওই তল্লাট থেকে ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহের খামতি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব খোঁজা চলছে। টালা থানার সাব-ইনস্পেক্টর চিন্ময় বিশ্বাসকেও এ দিন তলব করা হয়। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে ৯ আগস্ট সকাল থেকে টালার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডল (বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে বন্দি) এবং মামলার তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে আর জি করেই হাসপাতালে ছিলেন চিন্ময়। আর জি করের চিকিৎসক-পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় লালবাজারের তরফে একটি সিট গঠন করা হয়েছিল। চিন্ময় ওই সিটের অন্যতম সদস্য। তাঁকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, অপরাধের আগে পরে হাসপাতালের ওই অংশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও অন্যান্য বিষয়ে কিছু গাফিলতি স্পষ্ট হয়েছে। তাতে টালা থানার তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিন বিকেলের পরে আর জি করের প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। প্রশাসনিক ভবনে সন্দীপের অফিস ঘরেও তদন্তকারীরা গিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement