মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার জোড়া মোবাইলের সব লোপাট তথ্য পুনরুদ্ধার করল সিবিআই। ফাইল চিত্র।
‘মুছিলেও’ মোছে না, এমনই সে যন্ত্র!
বাঁকা পথে নিয়োগের সুপারিশপত্র-সহ বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে মোবাইলে লুকিয়ে রাখার পরে বিপদ এড়াতে আগেভাগে তা মুছে ফেলা হয়েছিল বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। সেই সঙ্গে তাদের দাবি, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার জোড়া মোবাইলের সেই সব লোপাট তথ্য পুনরুদ্ধার করা হয়েছে কোনও মন্ত্রবলে নয়, প্রযুক্তির অস্ত্রেই। তদন্ত সংস্থা সূত্রের বক্তব্য, ফোনে তুলে রাখা তথ্যেই যে বিপদ লুকিয়ে আছে, সেটা অনুমান করে বছর দেড়েক আগেই নিজের দু’টি মোবাইলের তথ্য লোপাট শুরু করেন। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেননি। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত ওই বিধায়কের অজ্ঞাতেই ‘ডিলিট’ করা তথ্য আধুনিক মোবাইলে লুকিয়ে ছিল বলে সিবিআইয়ের দাবি।
তদন্তকারীদের দাবি, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে ওই বিধায়কের সেই দু’টি মোবাইল থেকে ‘রিট্রিভ’ বা পুনরুদ্ধার করা তথ্যের মধ্যে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর সুপারিশপত্র পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গে মিলেছে দুর্নীতির আরও অনেক তথ্যপ্রমাণ। মিডলম্যান বা দালাল এবং কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে জীবনকৃষ্ণ কী ভাবে নিয়োগ দুর্নীতি চালিয়েছিলেন, সেই বিষয়েও নানা তথ্য দিয়েছে মোবাইল। মিলেছে শতাধিক ভয়েস কলও।
কলকাতা হাই কোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মামলা শুরু হওয়ার পরে পরেই জীবনকৃষ্ণ মোবাইলের তথ্য লোপাট শুরু করেন বলে সিবিআইয়ের দাবি। অভিযোগ, বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশির সময় তিনি মোবাইল দু’টি ছাদ থেকে ছুড়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন। দু’দিন ধরে পাম্প চালিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে, কাদা ঘেঁটে মোবাইল দু’টি উদ্ধার করে সিবিআই। এই ঘটনায় ওই বিধায়কের দুই আইনজীবীর দুই ভিন্ন মত উঠে এসেছে। এক আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘তল্লাশির সময় জীবনকৃষ্ণের মোবাইলে তাঁর মেয়ের ঘনঘন ভয়েস কল আসায় বিরক্ত হয়ে বিধায়ক ছাদে উঠে ফোন ছুড়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন।’’ অন্য আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ‘‘সবটাই সিবিআইয়ের সাজানো ঘটনা। জীবনকৃষ্ণ ফোন পুকুরে ফেলেননি।’’