West Bengal Municipal Recruitment Case

পুর-নিয়োগের পরীক্ষার নামে প্রহসন, দাবি চার্জশিটে

সিবিআইয়ের দাবি, ২০১৬ সালের পর থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ছ’টি পুরসভা-সহ ১৬টি পুরসভায় কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। সেই নিয়োগের দায়িত্বে ছিল ধৃত অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজ়োন।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪ ০৬:১৭
Share:

—প্রতীকী ছবি।

রাজ্যের ১৬টি পুরসভায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কার্যত স্বচ্ছতার বালাই ছিল না বলেই দাবি করছে সিবিআই। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি সিবিআই যে চার্জশিট আলিপুর আদালতে জমা দিয়েছে তার ছত্রে ছত্রে পরীক্ষার অস্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার।

Advertisement

সূত্রের দাবি, পরীক্ষার নামে আদতে প্রহসন হয়েছিল। বাজার থেকে সাধারণ জ্ঞানের বই কিনে তা থেকে প্রশ্ন তৈরি করা হয়েছিল। এই প্রহসনের নেপথ্যে মূলত অয়ন শীলের নাম উঠে এলেও পিছনে একাধিক রাজনৈতিক নেতার ভূমিকার কথাও এড়িয়ে যায়নি সিবিআই। বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুর নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কিত যে সব নথি উদ্ধার হয়েছে, তা-ও চার্জশিটের সঙ্গে কোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে বলে সিবিআইয়ের খবর।

সিবিআইয়ের দাবি, ২০১৬ সালের পর থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ছ’টি পুরসভা-সহ ১৬টি পুরসভায় কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। সেই নিয়োগের দায়িত্বে ছিল ধৃত অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজ়োন। পরীক্ষায় কোনও পেশাদারি বন্দোবস্ত ছিল না। কোনও বিশেষজ্ঞের বদলে পেশায় প্রোমোটার অয়ন শীল তাঁর কয়েক জন কর্মচারীকে নিয়ে ওই পরীক্ষার বন্দোবস্ত করেছিলেন। সিবিআইয়ের এ-ও দাবি, অয়ন তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন যে, বাজার থেকে সাধারণ জ্ঞানের বই কেনা হয়েছিল। সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্নের কোনও উত্তরমালা ছিল না। অর্থাৎ, উত্তরপত্র যাচাইয়ের কোনও ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। তাই পাশ-ফেলের কোনও মাপকাঠিই ছিল না। শুধু তাই নয়, তৃতীয় শ্রেণির কর্মী (গ্রুপ সি) এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী (গ্রুপ ডি) পদের জন্য একইপ্রশ্নমালা ছিল।

Advertisement

পরীক্ষার এমন ধরন দেখেই সিবিআই মনে করেছে যে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সুপারিশ ও অর্থের বিনিময়েই যোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী নিয়োগ করা হয়েছিল। অয়ন এবং তাঁর সংস্থাকে সামনেরেখে এই নিয়োগ দুর্নীতির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই দুর্নীতি থেকে কোটি কোটি টাকার লেনদেনও হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআইয়েরএকাধিক সূত্র।

প্রসঙ্গত, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অয়ন শীলের নাম উঠে এসেছিল। তাঁর বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি করতে গিয়ে শিক্ষা দুর্নীতির পাশাপাশি পুর নিয়োগ দুর্নীতির ওএমআর উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই বিষয়টি হাই কোর্টে জানান কেন্দ্রীয়তদন্তকারীরা। কোর্টের নির্দেশেই কার্যত পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তশুরু হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement