গরু পাচার মামলায় সিআইডি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ। —ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় সিআইডি তদন্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, এই মামলায় আপাতত সিআইডি তদন্ত করতে পারবে না। কারণ, সংশ্লিষ্ট মামলায় ইতিমধ্যে সিবিআই তদন্ত করছে। তাই একই মামলায় দু’টি সমান্তরাল তদন্ত চলতে পারে না।
একই মামলায় সিবিআইয়ের সমান্তরালে কেন রাজ্যের সিআইডি গরু পাচার কাণ্ডে তদন্ত করবে, এ নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মামলাকারী জানান, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার গরু উদ্ধার করেছে বিএসএফ। এগুলি বাংলাদেশে পাচার হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সংশ্লিষ্ট কাণ্ডে একাধিক সরকারি আধিকারিক এবং প্রভাবশালী নেতার যোগ পাওয়া গিয়েছে। এ নিয়ে সিবিআই এফআইআরও করেছে। ইতিমধ্যে এই আন্তর্জাতিক পাচার কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত করছে। সেখানে সিআইডি তদন্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযোগ, এর ফলে সিবিআই তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। বুধবার এই মামলায় সিআইডি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্ট।
প্রসঙ্গত, গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেন। সংশ্লিষ্ট মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ইডি) হাতে পেতে চাইছে অনুব্রত ও সহগলকে। আপাতত পুজো পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে থাকছেন কেষ্ট ও তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী। এর মধ্যে সক্রিয় হয়েছে সিআইডিও। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন গরু পাচার মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনামুল হক। সেই এনামুলের তিন ভাগ্নের বিরুদ্ধে আবার সিআইডি-র আবেদনের ভিত্তিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। সিআইডির দাবি এনামুলের তিন ভাগ্নে— জাহাঙ্গির আলম, হুমায়ুন কবির ও মেহেদি হাসানের বিপুল সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। কয়েকটি গুদাম সিল করেছে তারা। পাশাপাশি দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি এনামুলকেও জেরা করতে চেয়েছিল সিআইডি। প্রাথমিক ভাবে সিআইডি জানতে পেরেছে, মুর্শিদাবাদের চালকল ও মার্বেলের দোকান ছাড়াও তাঁদের আরও সম্পত্তি আছে। সে সবের হদিস পেতে বৃহস্পতিবার ওই জেলার লালগোলার বিভিন্ন জায়গায় হানা দেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, কলকাতার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের অফিস ছাড়াও অন্যত্র প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। তবে আপাতত সংশ্লিষ্ট মামলায় তারা তদন্ত করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল হাই কোর্ট।