মুকুন্দপুরে বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যুর ঘটনায় ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার মুকুন্দপুরে বৃদ্ধ দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনায় দাদা এবং বৌদির বিরুদ্ধে প্ররোচনার মামলা করলেন দম্পতির কন্যা। বুধবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
মুকুন্দপুরের ফ্ল্যাট থেকে মঙ্গলবার রাতে ৬৬ বছরের দুলাল পাল এবং তাঁর স্ত্রী ৫৮ বছরের রেখা পালের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি পৃথক সুইসাইড নোট পেয়েছে পুলিশ। তাতে ছেলে এবং বৌমাকেই মৃত্যুর জন্য দায়ী করে গিয়েছেন দম্পতি। অভিযোগ, ছেলে সৌরভ এবং বৌমা কল্যাণী বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার সঙ্গে নিত্য অশান্তি করতেন। এমনকি, তাঁদের মারধরও করা হত।
দম্পতির কন্যা সঙ্গীতা সেনাপতি হাওড়ার বালির বাসিন্দা। তিনি অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে দাদা এবং বৌদি নিয়মিত অশান্তি করতেন। কখনও কখনও মারধরও করতেন। এই নির্যাতনের মাধ্যমে বৃদ্ধ দম্পতিকে তাঁরা আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ফ্ল্যাটের দু’টি পৃথক ঘর থেকে বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। দুলালের দেহ ছিল ডাইনিং রুমে। তাঁর স্ত্রীর দেহ ঝুলছিল শোয়ার ঘরে। ফ্ল্যাটে ছেলে এবং বৌমার সঙ্গে থাকতেন তাঁরা। মঙ্গলবার ছেলে বা বৌমা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। পুলিশ সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটে তাঁদের অত্যাচারের কথা লিখে গিয়েছেন দু’জনেই। দম্পতির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, দু’জনের ঘাড়েই তীর্যক, অবিচ্ছিন্ন ফাঁসের দাগ রয়েছে। মৃত্যুর কারণ গলায় ফাঁস। তাঁদের ছেলে এবং বৌমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
দম্পতির আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, প্রায়ই ছেলে এবং বৌমা তাঁদের উপর অত্যাচার করতেন। খেতে দিতেন না। আশ্রম থেকে খেয়ে আসতে হত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে। ঘটনার দিন সকালেও তাঁদের মধ্যে ঝামেলা শুনেছিলেন কেউ কেউ। আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।