সিঙ্গুর মামলায় অনিচ্ছুক চাষিদের জমি ফেরত ও সেই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এর ফলে ইচ্ছুক চাষি, যারা আগেই জমি দিয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে নিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে অনিচ্ছুক চাষিদের বৈষম্য হচ্ছে বলে শীর্ষ আদালতে আবেদন জমা পড়ল। আবেদনে আরও দাবি তোলা হয়েছে, সিঙ্গুরের জমিতে যে সব জায়গায় রাস্তা, কারখানা এবং মাটি খুঁড়ে নির্মাণ হয়েছে, সেখানে আর চাষ করা সম্ভব নয়। তার বদলে ওই প্রকল্পের আশপাশে অন্য কোথাও উর্বর জমি দেওয়া হোক। সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে অনিচ্ছুক চাষিদের হয়ে যিনি মূল জনস্বার্থ মামলাটি করেছিলেন, সেই কেদারনাথ যাদবের তরফেই এই আবেদন জানানো হয়েছে। সোমবার সেই মমলার শুনানি।
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, টাটাদের ছোট গাড়ি কারখানার জন্য যারা স্বেচ্ছায় জমি দিয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়েছিলেন, তাদের জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। যারা ক্ষতিপূরণ নেননি, তারা তা পাবেন। অন্তর্বর্তী মামলায় আবেদনকারীর আইনজীবী শান্তিরঞ্জন দাসের যুক্তি, যারা দশ বছর আগে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, তারা এত দিন সেই অর্থ ভোগ করেছেন। অথচ অনিচ্ছুক চাষিদেরও এত দিন পরে একই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। টাকার মূল্য এত দিনে কমে গিয়েছে। অনিচ্ছুক চাষিরা এত দিন জমিতে চাষ করতে পারেননি। আবার আইনি লড়াইও লড়তে হয়েছে তাদের। এ জন্য টাকাও খরচ হয়েছে। তাই এই বৈষম্য দূর হওয়া দরকার। তাঁর মতে, রাজ্য সরকার জানিয়েছিল সিঙ্গুর প্রকল্পের পাশে সরকারের হাতে জমি রয়েছে। তাই যে সব চাষির জমিতে কারখানা বা রাস্তা নির্মাণের ফলে জমির উর্বরতা ফেরানো সম্ভব নয়, তাদের বিকল্প জমি দেওয়া হোক।
সিঙ্গুর মামলার রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি ভি গোপালাগৌড়া ও বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ। গোপালাগৌড়া ইতিমধ্যেই অবসর নিয়েছেন। সোমবার তাই বিচারপতি জে এস খেহর, বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি এ এন খানউইলকরকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা।