প্রতীকী ছবি।
কলকাতা শহরে সিসি ক্যামেরা বসানো ও নজরদারির পরিকাঠামো তৈরির জন্য তিন বছর আগে রাজ্য সরকারকে নির্ভয়া তহবিল থেকে ৫৬ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। অভিযোগ, সেই টাকায় কোনও কাজ হয়নি। তাই জনগণের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সেঁজুতি মুখোপাধ্যায় নামে এক আইনজীবী। তাঁর আর্জি, আদালত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দিক। সেই সঙ্গে টাকা ‘নয়ছয়ের বিষয়ে নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক।
২০১২ সালে দিল্লিতে গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে কেন্দ্রীয় সরকার নড়েচড়ে বসে এবং বড় শহরগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়। পরিকাঠামো তৈরির জন্য নির্ভয়া তহবিল নামে একটি প্রকল্প চালু করে তারা। সেই তহবিল থেকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। তার মধ্য থেকে ২০১৯ সালে রাজ্যকে দেওয়া হয় ৫৬ কোটি টাকা। সেঁজুতি তাঁর মামলার আবেদনপত্রে জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য ২০১৯ সালের পর থেকে কলকাতা পুলিশ চার বার টেন্ডার বা দরপত্র আহ্বান করেছিল। কিন্তু আগ্রহীর অভাবে চার বারই সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দরপত্র আহ্বান করা হয়। আগ্রহী না-মেলায় কলকাতা পুলিশ সেই টাকা তথ্যপ্রযুক্তি দফতরে ফিরিয়ে দেয়।
মামলাকারীর অভিযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব দরপত্রের আহ্বানে অদ্ভুত আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত শর্ত আরোপ করেছেন। তার ফলে কিছু নির্দিষ্ট সংস্থাই ওই কাজের জন্য দরপত্র জমা দিতে পারবে। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের অধীন সংস্থা ওয়েবেল একটি দরপত্র আহ্বান করেছে। কিন্তু সেখানেও অদ্ভুত কিছু শর্ত রয়েছে। গোটা প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতেই এই ধরনের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, ওয়েবেলের মতো বিশেষজ্ঞ কোম্পানিকে এর বরাত দেওয়া হয়েছে। কলকাতায় ১০২০ সিসি ক্যামেরা বসবে। সরকার আশা করছে, এ বছরের মধ্যেই সেই কাজ শুরু করা যাবে। ১৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।