ফাইল চিত্র।
সিএসসি বা কলেজ সার্ভিস কমিশনের ২০১৮ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অন্তত ৬০০ জন প্রার্থী এখনও পর্যন্ত অর্থাৎ এই তিন-সাড়ে তিন বছরেও নিয়োগপত্র পাননি। অভিযোগ, সব বিষয়ের মেধা-তালিকার বৈধতার সময়সীমা সমান ভাবে বাড়ানো হয়নি। এমনকি কোনও তালিকাই প্রকাশ করা হয়নি বেশ কিছু বিষয়ের। বর্তমানে সিএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়া তাঁদের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা।
উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউয়ের প্রার্থী-তালিকা প্রকাশের পদ্ধতি নিয়ে সম্প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। তার জেরে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়াই স্থগিত হয়ে গিয়েছে। নতুন তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়ে প্রত্যেক প্রার্থীর পাশে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বরও উল্লেখ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে উচ্চ আদালত।
সিএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি মণ্ডল বলেন, “এই তিন বছরে আমরা বহু বার আবেদন, আন্দোলন করেছি। কলেজ সার্ভিস কমিশন, শিক্ষা দফতর, মুখ্যমন্ত্রী— সকলেরই দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি।” তাঁদের অভিযোগ, অতিমারির দাপটে কিছু কিছু বিষয়ের মেধা-তালিকার বৈধতার সময়সীমা বাড়ানো হলেও সব বিষয়ের ক্ষেত্রে তা সমান ভাবে বাড়ানো হয়নি। কোনও বিষয়ে সাত মাস বাড়ানো হয়েছে, আবার কোনও বিষয়ে সময় বাড়ানোই হয়নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই ৬০০ প্রার্থীকে নিয়োগ না-করেই ফের নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয় গত বছর। ওই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, বিকাশ ভবনে তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল তৈরি হয়েও পড়ে আছে বলে তাঁরা জেনেছেন। তা হলে তাঁদের নিয়োগ না-করেই আবার শূন্য পদের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হল কেন, প্রশ্ন ওই প্রার্থীদের। হিমাদ্রিবাবু বলেন, "আমাদের দাবি, তালিকায় নম্বরের উল্লেখ করা হোক। আমরা আরটিআই করেও নম্বর জানতে পারিনি।"
এই দীর্ঘ সময় ধরে বার বার বিভিন্ন ভাবে আন্দোলন করেছেন এই হবু শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শুক্রবার তাঁরা বিধানসভার স্পিকার এবং সব বিধায়ককে ই-মেল মারফত তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়ে বিধানসভার অধিবেশনে এই বিষয়টি তোলার আবেদনও জানিয়েছেন।
কলেজ সার্ভিস কমিশনের সভাপতি দীপক কর রবিবার বলেন, “এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী মোট শূন্য পদের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি নাম প্রকাশ করা হয়। কেউ কোনও কারণে চাকরি না-করলে নিয়োগ করা হয় বাকিদের থেকে। ফলে একটি তালিকায় যত জনের নাম থাকে, তাঁদের সকলকে নিয়োগ করা সম্ভব নয়।” তিনি জানাচ্ছেন, একটি তালিকার বৈধতা এক বছর। ফলে পদ শূন্য থাকলে পরের বছর আবার তালিকা বেরোয়। আগের তালিকা থেকে নিয়োগ করা হয় না।