মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা দুই সমকামী তরুণী প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। প্রতীকী চিত্র
দোষ একটাই তাঁরা সমকামী। একে অপরকে ভালবাসেন। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও জীবনের বাকি চলার পথটুকু একসঙ্গে চলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। বাধা হয়ে দাঁড়ায় বাড়ির লোক। চলে অত্যাচারও। পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাননি। অবশেষে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মুর্শিদাবাদের দুই তরুণী সমকামী। সোমবার উচ্চ আদালতের বিচারপতি নির্দেশ দেন, একসঙ্গে থাকার যে সিদ্ধান্ত তাঁরা নিয়েছেন, তাতে আইনি কোনও বাধা নেই।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা দুই সমকামী তরুণী প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাঁরা এক সঙ্গে থাকতে চান। তাঁদের সেই ভালবাসা মেনে নিতে পারেনি পরিবারের লোকজন। ওই সম্পর্ক ভাঙার জন্য উভয়কেই জোর খাটানো হয়। এর বিরুদ্ধে বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দুই তরুণী। তাতে অবশ্য কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পুলিশ। উল্টে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয় বলে অভিযোগ। অবশেষে তাঁদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন কলকাতা হাই কোর্টের সরকারি আইনজীবী অঙ্কন বিশ্বাস। তাঁরা ওই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেন।
সোমবার মামলাটি ওঠে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে। বিচারপতির মন্তব্য, "আইন ওই সমকামীদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের পরিপন্থী নয়। আইন তাঁদের জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।" পাশাপাশি ওই সমকামীদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দেয় আদালত। বিচারপতি নির্দেশ, তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কোনওরকম বাধা সৃষ্টি করতে পারবেন না পরিবারের লোকেরাও। আদালতের এই রায়ের ফলে ফের নতুন করে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছেন ওই যুগল। তাঁদের আইনজীবী অঙ্কন বলেন, "সমগোত্রীয় হয়েও একজন আরেকজনকে ভালবেসে ওঁরা যে অন্যায় করেননি আদালতের নির্দেশ থেকে তা স্পষ্ট হয়ে গেল। সমাজও এ থেকে শিক্ষা পাবে। এই রায়ে আমরা খুবই খুশি।"