কলকাতা হাই কোর্টের বাইরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
দুপুর ২টোয় নিজের সল্টলেকের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বাড়ি ফিরছেন অভিজিৎ। জানালেন সাংবাদিক বৈঠক সূর্য সেনের মূর্তির পাশে করবেন না। বদলে তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে আসতে বললেন সাংবাদিকদের।
কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ডাকযোগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। তার পরেই রওনা হলেন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের কক্ষের দিকে।
জিপিও থেকে চিঠি পাঠিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট নাগাদ চিঠি দেন তিনি।
পদত্যাগ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠিয়ে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
সকাল ১০টার কিছু পরে কলকাতা হাই কোর্টে আসেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি শেষবার এজলাসে বসছেন খবর পেয়ে ছুটে এসেছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। তাঁরা কেউ বিচারপতির পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা জানাতে চান। কেউ বলেন, ‘‘আশীর্বাদ করুন যাতে সঠিক বিচার পাই।’’ আবার কেউ বিচারপতির ইস্তফার কথা শুনে আদালত চত্বরেই কেঁদে ফেলেন। কাউকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কেন চলে যাচ্ছেন স্যর। এটা তো আমাদের কাছে মন্দির। চলে যাবেন না স্যর।’’ কিন্তু বিচারপতি তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তিনি বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বিজেপির হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করবেন। শুধু তা-ই নয় তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের খাস অধিকারী গড় তমলুকে লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হবেন। ঘটনাচক্রে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে তাঁর শেষ মামলাটিও ছিল পূর্ব মেদিনীপুর সংক্রান্ত। সেই জেলার বিচারককে বরখাস্তের অনুরোধ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রধান বিচারপতিকে রিপোর্ট দেখে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করেন তিনি।
হাতে থাকা সমস্ত মামলার কাজ শেষ করেছেন সোমবারই। নিয়োগ দুর্নীতির মামলাগুলি তাঁর হাত থেকে সরে যাওয়ার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে ছিল শ্রম এবং শিল্প সংক্রান্ত মামলা। সেই সব মামলার কাজ শেষ করে তিনি মামলাগুলি ছেড়ে দেন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর একের পর এক রায় এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে মন্তব্যে বিস্মিত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের জনগণ। অনেক সুবিচার না পাওয়া মানুষ ভাবতে শুরু করেছিলেন বিচারপতিই পারবেন তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। অনেকে তাঁকে ঈশ্বরও মানতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আচমকাই ঘোষণা করলেন তিনি আর বিচারের কাজ করবেন না। বদলে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে যাবেন। সেই বৃহত্তর ক্ষেত্র যে রাজনীতি, তা-ও স্পষ্ট করেছিলেন বিচারপতি। একই সঙ্গে জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবারই বিচারপতি হিসাবে ইস্তফা দিতে চলেছেন তিনি।