TET Scam

দালালের মাধ্যমে শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করেছেন পার্থ-মানিক! রায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের নিয়োগে যত্রতত্র অনিয়মের ছাপ রয়েছে। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নম্বর বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ১৩:০২
Share:
Calcutta High Court Justice Abhijit Gangopadhyay blames Ex Educcation Minister Partha Chatterjee and former president of Board in alleged primary Teacher recruitment scam

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে তা পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে নজিরবিহীন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য দালালদের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করেছেন। শুক্রবার ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশে এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। রায়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি-সহ আধিকারিকদের কাজ অনেকটা স্থানীয় ক্লাবের মতো। আর ইডির তদন্তে উঠে এসেছে, যাঁদের টাকা ছিল প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এক লপ্তে এত শিক্ষকের চাকরি যাওয়া কার্যত ‘ঐতিহাসিক রায়’। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ মনে করছে এই রায়ের অভিঘাতে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। রায়ের পরেই পর্ষদের বর্তমান সভাপতি গৌতম পাল এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা ভাববেন। অন্য দিকে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে নজিরবিহীন। কেমন সেই দুর্নীতির প্রকার? বিচারপতি জানান, অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের নিয়োগে যত্রতত্র অনিয়মের ছাপ রয়েছে। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নম্বর বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে বিচারপতি লেখেন, ‘‘মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েছেন এমন চাকরিপ্রার্থীদেরও সংশ্লিষ্ট বিভাগে ১০ নম্বরের মধ্যে সাড়ে ৯ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, অ্যাপটিটিউড টেস্টও নেওয়া হয়নি।’’

এখানেই শেষ নয়। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়ার ভার যাঁদের উপর দেওয়া হয়, তাঁদের অনেকেই জানতেন না অ্যাপটিটিউড টেস্ট আসলে কী। যাঁরা বোর্ডের পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েছেন, লিখিত পরীক্ষায় কম স্কোর করেছেন, তাঁদের ইন্টারভিউতে বেশি করে নম্বর দিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আর এই পুরো দুর্নীতিতে সবচেয়ে বেশি দায় মানিকেরই বলে পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির। তিনি রায়ের শেষাংশে লিখেছেন, ‘‘এই পুরো অস্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি হয়েছে পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির জন্য। তিনি সব নিয়ম জানতেন। তা সত্ত্বেও সেই সব নিয়মই ভেঙেছেন। তাই রাজ্য সরকার যদি মনে করে, নতুন নিয়োগের পুরো ব্যয়ভার প্রাক্তন সভাপতির কাছ থেকে নিতে পারে।’’

Advertisement

পাশাপাশি নিয়োগ মামলায় ধৃত পার্থ এবং মানিকের কাছ থেকে এই দুর্নীতি সংক্রান্ত আরও তথ্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সৌজন্যে প্রকাশ্যে আসবে বলে মনে করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement