কলকাতা হাই কোর্ট (বাঁ দিকে)। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা কোথায় হবে, তা নিয়ে ইডিকে সিদ্ধান্ত জানাতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার ইডিকে বিচারপতি রাজা বসুরায়চৌধুরীর নির্দেশ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তকারী সংস্থাকে জেনে আসতে হবে যে, বিষয়টি নিয়ে তারা কী সিদ্ধান্ত নেবে। বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী উচ্চ আদালতে সওয়াল করে জানান, কম্যান্ড হাসপাতাল ছাড়া কাছাকাছি কেন্দ্রের অন্য কোনও হাসপাতাল নেই। কল্যাণীর এমস রয়েছে। সেখানে যেতে তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়। সেনার বক্তব্যকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের কাছে উপায় নেই। তাই সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কম্যান্ড হাসপাতালের আইনজীবী অনামিকা পাণ্ডে হাই কোর্টে বলেন, “শুধু স্বাস্থ্যপরীক্ষা নয়। সেখানে চিকিৎসা করাতেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর ফলে হাসপাতালের উপর চাপ বাড়ছে। তা ছাড়া আইনে পরিষ্কার বলা রয়েছে, বাইরের কেউ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারবেন না।” তিনি আরও বলেন, “এমন একটা ট্রেন্ড তৈরি হয়েছে যে, অন্য মামলার অভিযুক্তদের আদালত ওখানে পাঠিয়ে দিচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিকাঠামোর মধ্যে সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।”
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি রায়চৌধুরীর মন্তব্য, “দিনের শেষে সেনার গুরুত্ব সর্বোচ্চ। তাদের আপত্তি রয়েছে। এই অবস্থায় ইডিকে বিকল্প ভাবনাচিন্তা করতে হবে। কম্যান্ড হাসপাতালের বক্তব্য অযৌক্তিক বলা যায় না। ইডি কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা পরবর্তী শুনানির দিন জানাতে হবে।” এ ছাড়াও বিষয়টি নিয়ে কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ইডিকে আলোচনায় বসতে বলেন বিচারপতি।
নতুন করে কোনও রোগীকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়— এই বক্তব্য জানিয়ে প্রথম ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের উপর কতটা চাপ রয়েছে, তা বোঝাতে কর্তৃপক্ষ জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীকেও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে থাকে কম্যান্ড হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, “এই চেয়ার থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা বদল করতে চাওয়া হচ্ছে কেন?” একই সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বিচারক বলেন, “আপনারা দেশকে সেবা করেন বলছেন। হাসপাতাল তো মানুষের জন্যই।” দ্বিতীয় বারও একই বক্তব্য জানিয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কম্যান্ড হাসপাতাল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। কম্যান্ড কর্তৃপক্ষ তার পর এই বিষয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
প্রসঙ্গত, বুধবারেও স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুকে কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।