জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তোলার জন্য হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি মঞ্জুর করল না কলকাতা হাই কোর্ট। মামলাকারীকে অবকাশকালীন বেঞ্চে যেতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, দুর্গাপুজোর পর হাই কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।
বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাই কোর্টে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাকারীর আইনজীবী এই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন করেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, এখনই এই মামলার শুনানি সম্ভব নয়। পুজোর পরে হাই কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ বসলে প্রথমেই এই মামলা শোনা হবে, জানিয়েছেন তিনি।
কর্মবিরতির বিরুদ্ধে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলাটি করেছিলেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ডিরেক্টর। মামলাকারী রাজু ঘোষের বক্তব্য ছিল, আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ আগেই দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাঁদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশকে লঙ্ঘন করছে। এতে আদালতের অবমাননাও হচ্ছে। এর পরেই মামলাকারী আবেদন করেন, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তোলার জন্য রাজ্যকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিক হাই কোর্ট। কর্মবিরতি প্রত্যাহার নিশ্চিত করা হোক। মামলাকারীর আইনজীবী তৌসিফ আহমেদ আদালতে জানান, আইনের বাইরে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তাঁরা এটা করতে পারেন না।
শুক্রবার মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির প্রভাব পড়ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। পরিষেবা পাচ্ছেন না বহু সাধারণ মানুষ। বিনা চিকিৎসায় অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। এ ভাবে বেশি দিন চললে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। সেই কারণেই দ্রুত শুনানি প্রয়োজন এই মামলার। তবে সেই আবেদন খারিজ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতাল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সে দিন থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের দাবি ছিল, চিকিৎসকের মৃত্যুর বিচার করতে হবে এবং দোষীদের অবিলম্বে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। এ ছাড়া, হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিও তোলেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর তাঁদের কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়। তার পর আংশিক ভাবে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিছু দিন আগে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে ডাক্তারদের উপর হামলার ঘটনা ঘটলে নতুন করে পূর্ণ কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তার বিরুদ্ধেই জনস্বার্থ মামলা হয়েছে হাই কোর্টে।