মুর্শিদাবাদে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে, জানাল হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকাগুলিতে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে একটি কমিটি গঠনের কথাও বলেছে আদালত। মৌখিক নির্দেশে হাই কোর্ট জানিয়েছে, এই কমিটিতে থাকবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিসেস কমিটির এক জন করে সদস্য। মুর্শিদাবাদের অশান্তির পরে অনেকে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। ওই ঘরছাড়াদের পুনরায় ঘরে ফেরানোই হবে হাই কোর্টের গঠিত কমিটির মূল লক্ষ্য।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু অঞ্চলে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ১২ এপ্রিল (শনিবার) মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, উপদ্রুত ওই এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
বস্তুত, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ-সহ কিছু অঞ্চলে গত শুক্রবার থেকে গোলমাল শুরু হয়েছিল। ওই অশান্তির আবহে জেলায় তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে। অশান্তি এবং উত্তেজনার খবর পেয়ে শনিবারই মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। ডিজি জেলায় পৌঁছানোর আগে থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিএসএফ-এর জওয়ানদের সাহায্য নিচ্ছিল পুলিশ প্রশাসন। ডিজি জেলায় পৌঁছানোর পর উপদ্রুত এলাকায় টহল দেন তিনি। বিএসএফের সঙ্গেও বৈঠক হয়। পরে আদালতের নির্দেশে মুর্শিদাবাদে মোতায়েন হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীও। রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
গত ৭২ ঘণ্টায় নতুন করে হিংসার কোনও ঘটনা না ঘটায় ছন্দে ফিরছে ধুলিয়ান ও সুতি থানা এলাকা। জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে অশান্তির ‘ভরকেন্দ্র’ শমসেরগঞ্জেও। ধুলিয়ান শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বৃহস্পতিবার খুলছে। তবে নতুন করে যাতে কোনও অশান্তি না-ছড়ায় সে দিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখছে প্রশাসন। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট ১৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বস্তুত, গত কয়েক দিনে পুলিশ এবং বিএসএফের যৌথ উদ্যোগে ঘরছাড়াদের অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। এ বার বাকিদেরও ঘরে ফেরানোর লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের কথা বলেছে আদালত।