কোটি টাকা তোলা! না-দেওয়ায় মারধর

হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। আর কারা হামলায় জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড়া হবে না।’’ পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মানসবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমজুড় শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০২:১৭
Share:

তোলা হিসেবে এক কোটি টাকা দাবি করেছিল এক যুবক। আপত্তি জানানোয় ক’দিন আগেই খুনের হুমকি পান হাওড়ার সলপের এক জল-কারখানার মালিক। ছিল কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও। কিন্তু শুধু হুমকিতে না-থেমে শুক্রবার রাতে কারখানায় ঢুকে মানস রায় নামে ওই ব্যবসায়ী এবং তাঁর দেহরক্ষী সুশান্ত বারিককে রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল গোপীনাথ পাত্র নামে এলাকার ওই যুবক ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। সুশান্তবাবুর মাথা ফাটে। কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। শনিবার পুলিশ গিয়ে কারখানা চালু করে। গোপীনাথকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। আর কারা হামলায় জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড়া হবে না।’’ পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মানসবাবু।

সলপে পাকুড়িয়া সেতুর কাছে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে জল উৎপাদন এবং প্যাকেজিংয়ের ওই কারখানাটির নির্মাণকাজ এখনও চলছে। আংশিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। কারখানাটি করতে মানসবাবু ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছেন। আড়াইশো শ্রমিক এখানে কাজ করেন। কারখানা পুরোদমে চালু হলে অনেকের কর্মসংস্থান হবে জানিয়ে মানসবাবুর প্রশ্ন, ‘‘দুষ্কৃতীরা এ ভাবে ঝামেলা করলে কারখানা চালাব কী ভাবে?’’

Advertisement

মানসবাবুর বাড়ি হাওড়ার ইছাপুরে। কারখানাটি আগে ছিল জালান কমপ্লেক্সে। বছরখানেক আগে তিনি সলপে সরিয়ে আনেন। মানসবাবুর অভিযোগ, গোপীনাথ প্রায়ই টাকার দাবি করত। কয়েক বার তিনি সেই দাবি মেটান। কিন্তু কয়েক দিন ধরে সে এক কোটি টাকা দাবি করছিল। মানসবাবু বলেন, ‘‘এ বার ও পাঁচ বিঘা জমির জন্য এক কোটি টাকা তোলা চায়। আমি রাজি না-হওয়ায় হুমকি দেয়। বৃহস্পতিবার থানায় জানাই। তার পরেই শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ ওরা কারখানায় চড়াও হয়। মারধর করে আমার মোবাইল আছড়ে ভেঙে দেয়। গলার সোনার চেন লুট করে।’’ ঘটনার পরে মানসবাবু এবং তাঁর দেহরক্ষীকে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

গোপীনাথের বাড়ি ওই কারখানার কাছেই তেঁতুলকুলিতে। সেখান থেকেই তাকে ধরা হয়। এলাকার লোকজনের দাবি, গোপীনাথ সলপ-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের গোপাল ঘোষের অনুগামী। তাঁর নাম করে গোপীনাথ তোলাবাজি করত। তা ছাড়াও তার পিছনে এলাকার এক জমি-মাফিয়া রয়েছে। যদিও গোপীনাথের বিরুদ্ধে থানায় এর আগে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। গোপালবাবুর দাবি, ‘‘পাড়ার ছেলে হিসেবে গোপীনাথকে চিনি। আমার সঙ্গে ওর বিশেষ ঘনিষ্ঠতা নেই। ও দলেরও কেউ নয়।’’ মানসবাবুও মনে করেন, ওই জমি-মাফিয়ার নির্দেশেই ঝামেলা করেছে গোপীনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement