ট্রেনের সঙ্গে দুধ পরিবহণে নতুন ট্যাঙ্কার ব্রেথওয়েটের

ভোটের ময়দানে মারকাটারি লড়াই চলছে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। রেলে দুধ পরিবহণের জন্য কিন্তু মমতার বাংলার দিকে তাকিয়ে মোদীর গুজরাত! বঙ্গের সংস্থা ব্রেথওয়েট দুধ বহনের জন্য বিশেষ একটি ট্যাঙ্কার তৈরি করেছে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:০৯
Share:

ভোটের ময়দানে মারকাটারি লড়াই চলছে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। রেলে দুধ পরিবহণের জন্য কিন্তু মমতার বাংলার দিকে তাকিয়ে মোদীর গুজরাত! বঙ্গের সংস্থা ব্রেথওয়েট দুধ বহনের জন্য বিশেষ একটি ট্যাঙ্কার তৈরি করেছে।

Advertisement

ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এবং আমূলের নেতৃত্বে সারা দেশে ‘মিশন মিল্ক’-এর উদ্দেশ্য পূরণে আগামী দিনে প্রধান ভরসা হয়ে উঠতে চলেছে ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা ব্রেথওয়েটের তৈরি আধুনিক প্রযুক্তির রেল মিল্ক ট্যাঙ্কার (আরএমটি)।

খুব কম তাপমাত্রায় দুধ ভরে স্টেনলেস স্টিলের ওই ট্যাঙ্কারকে যাত্রিবাহী ট্রেনের সঙ্গে জুড়ে দিলে ২৪ ঘণ্টায় অনায়াসে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে দু’হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ। সড়কপথে যা কার্যত অসম্ভব। যে-সব এলাকায় দুধের উৎপাদন বেশি, কম উৎপাদনের এলাকায় বাড়তি দুধ দ্রুত পৌঁছে দিতে ব্রেথওয়েটের তৈরি নতুন ট্যাঙ্কারেই ভরসা রাখছে জাতীয় ডেয়ারি উন্নয়ন বোর্ড (এনডিডিবি)।

Advertisement

ব্রেথওয়েট সূত্রের খবর, দ্বিস্তরীয় স্টেনলেস স্টিলের প্রথম ট্যাঙ্কারটি তৈরির পরে তা গুণমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ২০১৭ সালে। তার এক বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে দুধের ট্যাঙ্কার পাঠানো শুরু হয় গুজরাতে। সম্প্রতি ব্রেথওয়েটকে দেওয়া ওই ট্যাঙ্কারের বরাত ২০ থেকে বাড়িয়ে ২৬ করা হয়েছে। প্রতিটি ট্যাঙ্কার তৈরিতে খরচ পড়েছে ৭০ লক্ষ টাকা। গুজরাতের আমদাবাদ থেকে উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্যে দুধ পরিবহণের কাজে ওই ট্যাঙ্কার ব্যবহার করা হচ্ছে।

কেন আলাদা নতুন এই ট্যাঙ্কার?

ব্রেথওয়েট-কর্তাদের দাবি, রেলে দুধ পরিবহণের জন্য দেশে বিশেষ ট্যাঙ্কার তৈরি হয়েছে আগেও। কিন্তু প্রায় ৪৫ হাজার লিটার দুধ একসঙ্গে বইতে পারে, এমন ট্যাঙ্কার সারা দেশে এই প্রথম। মাত্র দু’ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ওই ট্যাঙ্কারে দুধ ভরে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে গেলেও ট্যাঙ্কারে থাকা দুধের তাপমাত্রা কখনওই এক ডিগ্রির বেশি বাড়বে না। দ্বিস্তরীয় স্টিলের ট্যাঙ্কারের দুই স্তরের মধ্যে পলিইউরিথ্রেনের আবরণ ওই তাপামাত্রা রক্ষা করবে। সংস্থার তৈরি ট্যাঙ্কারের স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে ‘চিলিং টেস্ট’-এর ওই সাফল্যই সব চেয়ে বেশি কাজে এসেছে বলে দাবি করেন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জ্যোতিষ কুমার।

সারা দেশে মালগাড়ির গতি এখনও খুবই কম। তাই দুধের মতো পচনশীল দ্রব্য পরিবহণে যাত্রিবাহী ট্রেনই একমাত্র বিকল্প। যাত্রিবাহী ট্রেনের গতির সঙ্গে তাল রেখে নতুন ট্যাঙ্কারটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্রেক রয়েছে ওই ট্যাঙ্কারে। ট্যাঙ্কারে দুধ ভর্তি থাকা অবস্থায় ঝাঁকুনি কমাতে বিশেষ ধরনের স্প্রিং ব্যবহার করা হয়েছে চাকায়। দ্রুত দুধ ভর্তি এবং বার করা ছাড়াও গরম জলে ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করার প্রযুক্তিও রয়েছে। ডেয়ারি সামগ্রী পরিবহণের জন্য স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতেও উতরোতে হয়েছে নতুন ওই ট্যাঙ্কারকে।

জ্যোতিষ কুমার জানান, ট্যাঙ্কারের পরিকল্পনা তৈরি করেছিল রাইটস। তা সাফল্যের সঙ্গে রূপায়ণ করেছেন তাঁরা। ‘‘সদিচ্ছা থাকলে সরকারি সংস্থাও যে পেশাদারিতে সারা দেশে পাল্লা দিতে পারে, তা প্রমাণ করেছেন ব্রেথওয়েটের কর্মীরা,’’ দাবি এমডি-র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement