বিস্ফোরণের পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসন। বৃহস্পতিবার লাভপুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য।
গভীর রাতে ফের বিস্ফোরণ বীরভূমে। ক্লাবের পরে এ বার স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে!
গত শনিবার রাতে বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল মল্লারপুরের তিন ক্লাবের নীচের তলা। বুধবার রাত পৌনে তিনটে নাগাদ প্রবল বিস্ফোরণ ঘটল লাভপুর ব্লকের দাঁডকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত কর্মী আবাসনে। ভেঙে পড়ল ছাদ ও দেওয়াল। মল্লারপুরের ঘটনায় এখনও কোনও সূত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তার মধ্যেই লাভপুরের বিস্ফোরণ পুলিশের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেটের মুখে লাভপুরের ওসি-র সামনেই তাঁর অপসারণের দাবিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানোয় জেলা পুলিশের বিড়ম্বনা বেড়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘আমার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছি। সব পক্ষের ভূমিকাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য আলাদা আবাসন রয়েছে। কিন্তু কেউ থাকেন না। শুধু সকালে একটি ভবনে বর্হির্বিভাগ চলে। এলাকার শান্তি রক্ষায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি আবাসনে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প। ওই ক্যাম্প এবং আউটডোর থেকে প্রায় ৬০ ফুট দূরে, একটি পরিত্যক্ত আবাসনেই বুধবার রাতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ভেঙে পড়ে তিন দিকের দেওয়াল ও ছাদের একাংশ। এ দিন সকালে গিয়ে দেখা যায়, আবাসনটির চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ইট, কংক্রিটের টুকরো, দরজা-জানলার কাঠ, বেরিয়ে পড়েছে ছাদের লোহার রড। আবাসনের মধ্যে ডাঁই হয়ে রয়েছে ভারী ভারী চেরাই করা দরজা-জানলার কাঠ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, মজুত করে রাখা বোমার উপরে কাঠ পড়েই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
কী ভাবে পরিত্যক্ত আবাসনে বোমা এল, তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন তিন জন কনস্টেবল এবং চার সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁদের দাবি, তাঁরা ভোর পর্যন্ত পাহারা দিয়েছেন। কিন্তু তেমন কিছু চোখে পড়েনি। স্থানীয় মানুষের প্রশ্ন, তাই যদি হয়, তা হলে এত বোমা মজুত হল কী ভাবে? এ তো এক দিনে হয়নি। পুলিশেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতেই পুলিশ লাগোয়া মীরবাঁধ গ্রামে তল্লাশি চালায়। সেই সময় কেউ হয়তো পুলিশের নজর এড়িয়ে ওই পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে বোমাগুলি রেখেছিল বলে পুলিশের অনুমান করছে। মাস তিনেক আগেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই পুলিশ ক্যাম্প
লক্ষ্য করে গভীর রাতে তিনটি বোমা ছোড়া হয়।
স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি-র জেলা সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডলের অভিযোগ, এলাকা দখলের উদ্দেশ্যে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই বোমা মজুত করেছিল। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাঁডকা অঞ্চল সভাপতি কাজল রায়ের দাবি, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে এঁটে উঠতে না পেরে বিজেপি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে এলাকা দখলের জন্য বোমা মজুত করেছিল।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।