আমতায় বিজেপির মহিলাদের তথ্যানুসন্ধান দল। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে মহিলাদের উপর হিংসার তথ্য নিতে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার পর এ বার হাওড়ার আমতায় পৌঁছে গেল বিজেপির পাঁচ মহিলা সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দল। পঞ্চায়েত ভোটের পরে আমতা বিধানসভার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ ওঠে। তাঁদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে।
বুধবার সকালে আমতায় যান রমা দেবী, কবিতা পাতিদার, অপরাজিতা ষড়ঙ্গী, সন্ধ্যা রায় এবং সরোজ পাণ্ডে। উপদ্রুত এলাকা ঘুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে ওই কমিটি। রমা দেবীদের কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজিকে দেখে মমতাদির শেখা উচিত। কী ভাবে গ্রামীণ গরিব মানুষদের উন্নয়ন করেছেন তিনি। কী ভাবে তাঁদের রুজিরোজগারের উপায় করেছেন। কী ভাবে বাড়িঘর, পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এখানে গরিব মানুষদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মহিলারাও আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না!’’
ওই প্রতিনিধি দলের অভিযোগ, বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের নামে কেবল হিংসা হয়েছে। বিরোধী রাজনীতি করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর ধেয়ে আসছে আক্রমণ। শুধু ওই ব্যক্তিই নয়, তাঁর পরিবারের উপরও হিংসার আঁচ এসে পড়ছে। তাঁদের বাড়িতে আগুন ধরানো হচ্ছে। মহিলাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে এক জন মহিলা, সেখানে এমন ঘটনা একেবারেই অনভিপ্রেত বলে কটাক্ষ করেছে এই তথ্যানুসন্ধান দল। দলের সদস্যেরা জানিয়েছেন, দিল্লি ফিরে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডাকে এ নিয়ে রিপোর্ট দেবেন।
উল্লেখ্য, বাংলায় যখন বিজেপি এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে, মণিপুর হিংসার ঘটনায় তেমনই ওই রাজ্যে যাচ্ছে তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে বুধবারই মণিপুর যাচ্ছেন দোলা সেন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সুস্মিতা দেব এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, পঞ্চায়েত ভোটে বাংলার ‘হিংসাস্থল’ ঘুরে দেখতে আগেই রাজ্যে ঘুরে গিয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বাধীন কমিটি। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে রবিশঙ্কর দাবি করেন, বিজেপি ছাড়াও কংগ্রেস এবং বাম কর্মী-সমর্থকেরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, দলের কর্মীদের হেনস্থা নিয়ে নীরবতা পালন করছেন সীতারাম ইয়েচুরি এবং কংগ্রেস নেতারা।
বাংলায় এসে রবিশঙ্কর এ-ও বলেছিলেন, ‘‘মমতার সরকার গণতন্ত্রের লজ্জা। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ৪৫ জন মারা গিয়েছেন এই রাজ্যে। এমনকি, গণনার দিনও অশান্তি হয়েছে। আমি বাংলার মানুষকে আশ্বাস দিচ্ছি, বিজেপি লড়াই করবে।’’ তিনি অভিযোগের সুরে জানান, মমতার সরকারের আমলে রাজনৈতিক হিংসা বাম আমলকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। পাল্টা তৃণমূল আক্রমণ শানায় বিজেপিকে। তণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলেই, রাজ্যের যেখানে খুশি যেতে পারছেন রবিশঙ্করেরা।’’