সিপিএম পারে না। বিজেপি পারে। বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আগামী দিনে এই বার্তার অশনি সঙ্কেত দেখছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
গৌতম দেবের নেতৃত্বে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করার জন্য তিন বার চেষ্টা করেছিল। প্রতিবারই তৃণমূল সরকারের আপত্তিতে সভাস্থল পরিবর্তন করে তারা। কিন্তু একই রকম পরিস্থিতিতে এ বার দেখা গেল ভিন্ন ছবি। পুলিশ-প্রশাসনের আপত্তির কাছে নতিস্বীকার না করে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে দাবি আদায় করে দেখিয়ে দিল বিজেপি।
সিপিএমও যে আদালতের কথা ভাবেনি, তা নয়। প্রতি বারই গৌতমবাবু সাংবাদিক সম্মেলনে রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলতেন, পুলিশ ওই জায়গায় সভা করতে আপত্তি জানালে তাঁরা আদালতে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। বিজেপি কিন্তু জেদে অটুট থেকে, তিন বার আদালতে দৌড়ে, ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই সভা করার অনুমতি আদায় করে নিয়েছে।
প্রশ্ন, তা হলে কি এ ক্ষেত্রেও সিপিএমকে পিছনে ফেলে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে গেল বিজেপি?
বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পরে, দলকে চাঙ্গা করতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম প্রথমবার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেটা ২০১১-র অক্টোবর। কিন্তু পুলিশের আপত্তিতে তা হয়ে ওঠেনি। পরে লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে চলতি বছর ৮ জানুয়ারি আবার ওই জায়গায় সভা করার চেষ্টা করেন গৌতমবাবু। কিন্তু সে বারও তাঁদের সরে যেতে হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের সভাও ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে করার চেষ্টা করেছিল বামেরা। কিন্তু তাদের যেতে হচ্ছে শহিদ মিনার ময়দানে।
ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার অনুমতি চেয়ে প্রতি বারই পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় গিয়েছেন সিপিএম নেতা নেপালদেব ভট্টাচার্য। তাঁদের ‘ব্যর্থতা’ আর বিজেপির ‘সাফল্য’-- বিষয়টি কী ভাবে দেখছেন? নেপালবাবুর জবাব, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল সভা করা। তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়া নয়। বার বার পুলিশের কাছে গিয়েছি। আর পুলিশ নানা যুক্তি দিয়ে তা বাতিল করেছে।” সিপিএম নেতার স্বীকারোক্তি, “এ বারও তৃণমূল সেই চেষ্টা করেছিল। বিজেপি কিন্তু হাত মুচড়ে অনুমতি আদায় করে নিয়েছে। আমরা পারিনি।”