২০২৪-এ বড় লক্ষ্য। এখন থেকেই তৎপর বিজেপি। —ফাইল চিত্র।
প্রথম বার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার গড়ে ২৮২ আসনে জিতে। ২০১৪ সালের সেই ফলের পরে ২০১৯-এ আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০৩ করে বিজেপি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে শক্তি আরও বাড়ানোর লক্ষ্য। গত জুন মাসে বিজেপি যখন এই লক্ষ্য নেয়, তখন ঠিক হয়েছিল দেশে হেরে যাওয়া ১৪৪ আসনকে বিশেষ নজরে আনা হবে। এখন সেই আসন সংখ্যা আরও বাড়িয়ে ১৬০ করা হয়েছে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, গোটা দেশে সমীক্ষার পরে দেখা গিয়েছে, প্রাথমিক লক্ষ্যের থেকে বেশি হারা আসনে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তা দেখেই লক্ষ্য বৃদ্ধি। তবে দলেরই এক নেতার দাবি, ‘‘গত বার জেতা সব আসনে যে এ বারও জয় মিলবে তা তো নিশ্চিত করে বলা যায় না। তাই নতুন আসনে নজর।’’ বাংলার উদাহরণ টেনেই তিনি বলেন, ‘‘আসানসোল ইতিমধ্যেই হাতছাড়া। ব্যারাকপুরের সাংসদও তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। তাই ক্ষমতায় ফিরতে গেলে কিছু নতুন আসনে তো জিততেই হবে।’’
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দেয় বিজেপি। দেশের এমন ১৪৪টি আসনে শক্তি বাড়ানোর কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত হয়, যেখানে গত লোকসভা নির্বাচনে সাফল্য পায়নি বিজেপি। বাদ রাখা হয়ে এমন আসনগুলি, যেখানে আদৌ শক্তি বাড়ানোর মতো জায়গায় নেই দল। বাদ রাখা হয় শরিক দলের জেতা আসনগুলিও। ১৪৪-এর মধ্যে বাংলায় হারা আসন ছিল ১৯টি। ‘অতি কঠিন’ হিসাবে চিহ্নিত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং বারাসত। বাদ ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি। তবে সেটি কী কারণে তা স্পষ্ট নয়। কারণ, তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর কাঁথিতে গত বিধানসভা নির্বাচনে সাতটির মধ্যে পাঁচটি আসনে জয় পায় গেরুয়া শিবির।
প্রাথমিক ভাবে এই আসনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের উপর। আসনগুলিতে সংগঠনের অবস্থা জানতে সফর চালান ওই মন্ত্রীরা। ‘লোকসভা প্রবাস যোজনা’ নামের কর্মসূচিতে বলা হয়, ওই আসনগুলিতে জেতার পরিস্থিতি তৈরি করতে কী করা দরকার তার রূপরেখা তৈরি করতে হবে মন্ত্রীদের। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই কাজ করতে গিয়েই গেরুয়া শিবিরের ধারণা, দেশে আরও ১৬টি আসনে জেতার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। তবে সেই আসনগুলি মূলত বিহার ও তেলঙ্গানায়।
১৬০টি আসনের বর্তমান পরিস্থিতি কেমন, তা নিয়ে পর্যালোচনার জন্য ডিসেম্বরেই হায়দরাবাদে একটি বৈঠকে বসতে চলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবারের সেই বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ ছাড়াও উপস্থিত থাকতে পারেন দুই সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে এবং সুনীল বনশল। ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়ার কথা সভাপতি জেপি নড্ডার।