দিলীপ ঘোষ এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব রাজ্য বিজেপি এ বার ‘সন্ত্রাস’ অভিযোগ নথিবদ্ধ করতে কমিটি গড়ল। আগেই কয়েকজন নেতার উপরে ওই দায়িত্ব দেওয়া হলেও শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই কমিটি ঘোষণা করেছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে বীরভূমের সিউড়ি আসনে পরাজিত প্রার্থী জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে। প্রাক্তন সাংবাদিক জগন্নাথ প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষিত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। এ বার দলের তরফে বড় দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁকে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত কলকাতায় থেকেই তিনি গোটা রাজ্যের পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন ও নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেবেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, জগন্নাথের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ ও পানিহাটির দুই প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত এবং সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-তে নবাগত এই তিন জন ছাড়াও রাজ্য বিজেপি-র কয়েকজন এবং দলের পাঁচটি জোন থেকে দু’জন করে কমিটিতে রয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এখনও বাংলায় বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। কিন্তু আপাতত সেই কাজ দেখছেন দলের আরেক সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে ফল ঘোষণার পরে পরেই বাংলায় এসেছেন পঞ্জাবের ওই নেতা। জানা গিয়েছে, তাঁরই নির্দেশে এই কমিটি গড়েছেন দিলীপ। শুক্রবার হেস্টিংসে রাজ্যে বিজেপি-র পদাধিকারিদের নিয়ে বৈঠকে বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট নেওয়া হয়।
এর পরে দিলীপ সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও ছিলেন। সেখানেই দিলীপ দাবি করেন, জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। খুন, মারধর, অগ্নিসংযোগ থেকে শ্লীলতাহানিও চলছে। এমন ঘটনা প্রায় ১৫ হাজার বলে দাবি করেন দিলীপ। তিনি বলেন, “হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে।” সেই সঙ্গে দিলীপের দাবি, অনেকেই অত্যাচারের কথা পুলিশকে ভয়ে জানাতে পারছেন না। আবার অনেক জায়গায় পুলিশ এফআইআর নিচ্ছে না। বিজেপি কর্মীদের অনেক জায়গায় রেশনের সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে না এবং টিউবওয়েলে চেন দিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি চাইছে, সব অভিযোগ পুলিশের কাছে নথিবদ্ধ হোক। যাঁরা পুলিশের কাছে যেতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানাবেন, তাঁদের জেলা নেতৃত্ব সাহায্য করবেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক অথবা প্রার্থীও উদ্যোগ নেবেন। রাজ্য নেতারাও বিভিন্ন জেলায় সফর করবেন। কোথায় কত অভিযোগ জমা দেওয়া গেল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট তৈরি করবে জগন্নাথের নেতৃত্বে নতুন কমিটি। তা নিয়ে যেমন রাজ্য প্রশাসনের কাছে যাওয়া হবে, তেমনই রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় সরকারকেও সেগুলি জানানো হবে। একই সঙ্গে কমিটি নিয়মিত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নথিবদ্ধ অভিযোগ সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেবে।