ফাইল চিত্র
নিহত দলীয় কর্মী দীপক মণ্ডলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে সোমবার পুলিশ-প্রশাসনের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি নেত্রী ভারতী ঘোষ।সোমবার দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তমলুকের শ্রীরামপুর থেকে বাইক মিছিল করে সন্ধ্যা নাগাদ বাকচার থিদিরপুরে নিহতের বাড়িতে পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি ভারতী ঘোষ। দীপকের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। পরে নিহতের বাড়ির সামনেই তৈরি মঞ্চে উঠে বলেন, ‘‘তিন দিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় প্রথমে এই মামলা হাইকোর্টে নিয়ে যাব। তারপর সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গিয়ে আমরা ঘটনার সিবিআই তদন্ত করাব।’’ বিজেপি নেত্রী আরও অভিযোগ করেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ অভিযুক্তদের না গ্রেফতার করে সবং এবং ময়নার বিজেপি বুথ সভাপতিদের অহেতুক হয়রান করছে। সেদিন ফুটবল খেলার আয়োজন কারা করেছিল তা নিয়ে বিজেপির সভাপতিদের ঝামেলায় ফেলার চেষ্টা করছে।’’ এ দিকে নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফে যে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে সবং থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে পুলিশের দাবি।
শনিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ে ফুটবল ম্যাচ দেখে বাড়ি ফেরার পথে বোমা ফেটে মারা যান ময়নার বিজেপি কর্মী দীপক মণ্ডল। তারপর থেকে ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকায় দলের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। ঘটনার পর রাতেই রাজনৈতিক অশান্তির আশঙ্কায় গোটা এলাকায় পুলিশ এবং প্রচুর পরিমাণ সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রাখা হয়। তা সত্ত্বেও রবিবার রাতে কয়েকশো বিজেপি কর্মী মোটরবাইক মিছিল করে আড়ংকিয়ারানা, বাকচা বাজার পেরিয়ে দলীয় কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে খিদিরপুর গ্রামে ঢোকে। সেখানে নিহত দলীয় কর্মীকে শ্রদ্ধা জানান তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক ও অন্যরা। রাতেই দীপকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে বার বার রাজনৈতিক অশান্তিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাকচা। এলাকায় শাসকদলের অনেক নেতা-কর্মীই ঘরছাড়া বলে অভিযোগ। দলের কর্মী-সমর্থকদের জোর করে এদিন বিজেপির সভানেত্রীর কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। একইসঙ্গে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির লোকজন বোমা এবং অস্ত্র তৈরির জন্য কাঁচামাল মজুত করছে বলেও অভিযোগ শাসক দলের।
ময়না ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘গত ১৪ অগস্ট অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম মজুত রাখা হচ্ছে বলে পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। তারপরেও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি। বরং আমাদের দলের স্থানীয় নেতৃত্বরা এলাকায় না থাকায় এদিন বিজেপি জোর করে দলের কর্মী-সমর্থকদের ওদের মিছিলে নিয়ে গিয়েছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য নীলাঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমাদের দলের কর্মীকে তৃণমূল নৃশংসভাবে খুন করেছে। তার প্রতিবাদে গোটা ময়নার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এদিনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন।’’