শোভন-বৈশাখী জুটিকে কাজে লাগাতে তৎপর রাজ্য বিজেপি।
গত সোমবার শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কলকাতায় বাইক ব়্যালি করতে গিয়ে মুখ পুড়েছে বিজেপি-র। গরহাজির ছিলেন শোভন-বৈশাখী জুটি। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ফের একই রকম কর্মসূচি নিতে চলেছে বিজেপি। এ বার দলের দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার উদ্যোগ। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে, তাতে আগামী সোমবার গোলপার্ক থেকে শুরু হবে মিছিল। যাবে সেলিমপুরে জেলা বিজেপি দফতর পর্যন্ত। সেখানে শোভন-বৈশাখীকে সংবর্ধনা দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য বিজেপি-র।
শুক্রবার বিজেপি-র দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি শঙ্কর শিকদার বলেন, ‘‘দলে ওই দিন মিছিল ও সংবর্ধনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বার পুলিশের অনুমতি পেলে সবটা জানানো হবে। ঠিক হয়েছে বিকেল ৩টেয় মিছিল শুরু হবে।’’
অনেক দিন বিজেপিতে যোগ দিলেও সে ভাবে দলের হয়ে ময়দানে নামেননি শোভন বৈশাখী। সম্প্রতি বিজেপি-র কলকাতা সাংগঠনিক জোনের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে শোভনকে। সহ-আহ্বায়ক হয়েছেন বৈশাখী। এর পরে গত ৪ জানুয়ারি ছিল প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচি। ঠিক ছিল, রাজ্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে বাইক র্যালিতে অংশ নেবেন শোভন-বৈশাখী। এমনও ঠিক ছিল যে, আলিপুর চিড়িয়াখানার কাছাকাছি এলাকা থেকে শুরু হয়ে ওই মিছিল আসবে রাজ্য বিজেপি দফতরে। সেখানে শোভন-বৈশাখীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। কিন্তু সে সব ভেস্তে যায়।
গত সোমবারের মিছিলে পুলিশের অনুমতি না মেলায় চাপে ছিল বিজেপি। সেই চাপ বহুগুণ বেড়ে যায় শেষ মুহূর্তে প্রথমে বৈশাখী ও পরে শোভন মিছিলে যেতে অস্বীকার করায়। শেষ পর্যন্ত কৈলাস মিছিলে যান মুকুল রায় ও অর্জুন সিংহকে সঙ্গে নিয়ে। এ নিয়ে দলের ভিতরে বিবিধ আলোচনা হয়। দলের ‘মুখ পোড়ানো’র জন্য শোভন-বৈশাখীকে এর পর আর বেশি গুরুত্ব না দেওয়ার দাবিও উঠতে থাকে। তার মধ্যেই জুটির গোসা ভাঙাতে সচেষ্ট হয় দলের একাংশ। তাতে কাজও দেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের সামনে মিছিলে না থাকার জন্য ক্ষমা চেয়ে ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী। বলেন, ‘‘মিছিলে যেতে পারলে খুব আনন্দ হত। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই যেতে পারিনি। বিকেল ৩টের সময় একবার একটা ক্ষীণ চেষ্টা করেছিলাম। কোনও ভাবে যদি তৈরি হয়ে বেরোন যায়। কিন্তু শোভনবাবুরও ১০০ মতো জ্বর ছিল সারাদিন। তা সত্ত্বেও উনি চেষ্টা করেছিলেন, ১০ মিনিটের জন্যও যদি যাওয়া যায়! কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই যাওয়া হয়ে ওঠেনি।’’ মঙ্গলবাই কলকাতা জোনের নেতাদের নিয়ে বৈঠকও করেন শোভন-বৈশাখী।
বিজেপি সূত্রে খবর, অমিত শাহের স্পষ্ট নির্দেশ— বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোনও শক্তিকেই দূরে রাখা যাবে না। ছোট-বড় সব নেতাকে কাজে লাগাতে হবে। সেই নির্দেশমতোই শোভন-বৈশাখীকেও নির্বাচনের কাজে লাগাতে চায় বিজেপি। রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষনেতা বলেন, ‘‘৪ জানুয়ারির শিক্ষা নিয়েই ১১ জানুয়ারির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শোভন-বৈশাখীকে আমন্ত্রণ জানানো থেকে অন্য কোনও বিষয়ে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’