পাহাড়ের অশান্তিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিম পুলিশের দ্বন্দ্বে সিকিমের পাশে দাঁড়াল বিজেপি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুঙ্গের নামে ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করেছে সিআইডি। সিকিমের নামচিতে গুরুঙ্গ-সহ মোর্চা নেতাদের ধরতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অভিযান চালালে সিকিম পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। সিকিম প্রশাসনের অভিযোগ, তাদের না জানিয়ে সেখানে পুলিশি অভিযান করেছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যের সরকার আবার পাল্টা অভিযোগ করছে সিকিমের ভূমিকার বিরুদ্ধে। এই কাজিয়ায় রাজ্য পুলিশকে দুষে সিকিমেরই পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য বিজেপি।
ঝাড়গ্রামে রবিবার দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে প্রশ্নের জবাবে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দার্জিলিং সমস্যার সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী বা মোর্চা কেউই আগ্রহী নন। সকলেই রাজনীতির আগুনে রুটি সেঁকতে চাইছেন। গুরুঙ্গ ও তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্বকে ছোট করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের সর্বনাশ করছেন। নিজের রাজনৈতিক শক্তি বাড়াতে গিয়ে এখন সিকিমের সঙ্গেও ঝগড়া লাগাচ্ছেন।’’ গুরুঙ্গকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে অভিযোগ করে দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন বলে ওঁকে যে কোনও উপায়ে শেষ করবেন!’’
পাশাপাশি, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুলবাবু বলেন, ‘‘অন্য রাজ্য থেকে অপরাধী ধরতে তো পুলিশ হামেশাই যায়! তখন তো প্রশ্ন ওঠে না! এখন উঠছে, কারণ অনুমতি নেওয়া হয়নি।’’ রাহুলবাবু মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘এখানে অনুমতি নিয়ে সেনা কুচকাওয়াজ হচ্ছিল। তাতেই মুখ্যমন্ত্রী রব তুলেছিলেন, সেনা নাকি নবান্ন দখল করতে যাচ্ছে। তা হলে অনুমতি ছাড়া সিকিমে পুলিশ পাঠালেন কেন?’’
রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য এ দিনই পাল্টা বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কোনও চেষ্টা বিজেপি নেতারা করেননি। রাজ্য সরকার শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। উল্টে তারা সেখানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।’’
পাহাড়ের পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠার জন্য সিপিএমও দায়ী করেছে রাজ্য সরকারকেই। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘ভাগ করো, শাসন করো নীতিতে রাজ্য সরকার চলছে। সরকারের বিচক্ষণতা কোথায় গেল?’’
রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে এ দিন পশ্চিমবঙ্গ বনাম সিকিমের ঝগড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য বিতর্কে যাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। রাজ্য তার ভূমিকা পালন করবে।’’