নড্ডার বাড়িতে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র
বিপুল পরিমাণে তোলাবাজির অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে গোলমাল থেকেই রামপুরহাটে ভাদু শেখ খুন কিংবা বগটুই গ্রামে আগুন ও হত্যাকাণ্ড। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এমনই রিপোর্ট জমা দিল বগটুই ঘুরে আসা বিজেপি-র প্রতিনিধি দল। সেই রিপোর্টে শুধু বগটুইয়ের ঘটনাই নয়, তার সঙ্গে রাজ্যের অন্যত্রও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলেও দাবি করা হয়েছে। অতীতের দাবি ফের উল্লেখ করে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাতে কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করে সেই আর্জিও জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
বিজেপি সূত্রে খবর, ২৩ পাতার ওই রিপোর্টে বীরভূম জেলার রামপুরহাটে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে তোলাবাজি ও সিন্ডিকেটের টাকা নিয়ে নানা গোলমাল চলছিল বলে দাবি করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, ভাদু শেখ খুন হওয়ার পিছনেও রয়েছে টাকার বখরা নিয়ে লড়াই। এমনকি, গরিব ভাদু কী করে ধনী হয়ে উঠেছিলেন তার কাহিনিও বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। বুধবার জমা দেওয়া ওই রিপোর্ট সম্পর্কে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘বগটুই গিয়ে আমরা যা দেখেছি, যা শুনেছি সেটাই রিপোর্টে দিয়েছি। একই সঙ্গে বগটুই যাওয়ার পথে কী ভাবে তৃণমূলের হাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছি সেটাও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ একই সঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, বাংলায় শাসকের আইন চলছে। বিস্তারিত শুনে নড্ডাজি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।’’
বগটুইয়ের ঘটনা জানার পরেই রাজ্য বিজেপি কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি তোলে। ২২ মার্চ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা পাঁচ সদস্যের একটি সত্যান্বেষী কমিটি তৈরি করে দেন। সেই কমিটিতে সুকান্তের পাশাপাশি থাকেন রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশকর্তা তথা আইপিএস ভারতী ঘোষ। উল্লেখযোগ্য ভাবে দলে থাকা বাকি তিন সদস্যও প্রাক্তন আইপিএস অফিসার। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি তথা রাজ্যসভার সাংসদ ব্রজলাল, মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা সাংসদ সত্যপাল সিংহ এবং কর্নাটকের প্রাক্তন আইজি কে সি রামমূর্তি। ২৩ মার্চ রাতে কলকাতায় আসা তিন সাংসদকে নিয়ে পরের দিন বগটুই যান সুকান্ত, ভারতীরা। বুধবার দিল্লিতে নড্ডার বাসভবনে গিয়ে কমিটির পাঁচ সদস্য সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।
রিপোর্টে ঠিক কী লেখা হয়েছে তা জানাতে রাজি না হলেও সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা বলেছি যে, পুলিশের ব্যর্থতার জন্যই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে তৃণমূলের স্বার্থসর্বস্ব গোষ্ঠী রাজনীতির জেরেই এই হত্যাকাণ্ড।’’ পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে সুকান্তর দাবি, ‘‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মুহূর্তের মধ্যে বাড়িগুলিতে অগ্নিসংযোগ হয়নি। রাস্তার ডান দিকে, বাঁ দিকে এবং মাঠের ভিতরের বাড়িতেও আগুন লাগানো হয়। যেটা করতে সময় লেগেছে। অনেক ক্ষণ ধরে হামলা চালানো হয়েছে। এটা পুলিশের গাফিলতি শুধু নয়, পুলিশও সমান দোষী। রিপোর্টে এর বিস্তারিত আমরা দিয়েছি।’’