BJP

WB Municipal election 2022: প্রার্থী দিতে বাধা, নালিশ বিজেপির

শমীকের অভিযোগ, ভোটের দিন অশান্তি পাকাতে শিলিগুড়িতে বহু হোটেল এবং গেস্ট হাউসে বহিরাগতদের এনে রাখা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

১০৮টি পুরসভার অনেক জায়গাতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। জবাবে তৃণমূল নেতৃত্ব জানালেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে, তা অনভিপ্রেত। তবে একই সঙ্গে বিজেপির প্রার্থী দেওয়ার সাংগঠনিক শক্তি নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তাঁরা।

Advertisement

আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের যে ১০৮টি পুরসভায় ভোট হবে, বুধবার ছিল সেগুলিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তি ছিল। দলের রাজ্য নেতৃত্বের দাবি ছিল, সব ক’টি পুরসভার প্রার্থী তালিকাই জেলাকে পাঠিয়ে দিয়ে ঘোষণা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি পুরসভার প্রার্থী তালিকা বিজেপির জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ দিন সকাল থেকেই অবশ্য বিভিন্ন পুরসভায় বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়নে তৃণমূলের বাধার অভিযোগ আসতে থাকে। বিকেলে মনোনয়নের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য জুড়ে পুলিশের সহযোগিতায় তৃণমূলের তাণ্ডব চলেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে আমাদের প্রার্থীদের এবং এজেন্টদের বাড়িতে ভয় দেখানো হয়েছে। খোলা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাইক মিছিল হয়েছে। পুলিশের কাছে তাণ্ডবের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জানানোর পরেও তারা কার্যত নীরব দর্শক থেকেছে।”

বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া এ দিন দুপুরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করে বোলপুর, সাঁইথিয়া, দিনহাটা, টাকি এবং বসিরহাট পুরসভায় তাঁদের প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধার অভিযোগ জানান। পরে শমীক জানান, তৃণমূলের বাধায় সাঁইথিয়ায় বিজেপি-র কোনও প্রার্থীই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। বোলপুরে ২২ জন প্রার্থীর মধ্যে তিন জন মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছেন। টাকিতে চার জন, বসিরহাটে এক জন এবং গুসকরায় দু’জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। বজবজে ২০টি ওয়ার্ডের ১২টিতেই বিরোধীদের কোনও প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেননি। প্রসঙ্গত, ভোটের আগেই এ দিন সাঁইথিয়া, বজবজ এবং দিনহাটা পুরবোর্ড তৃণমূল কার্যত পেয়ে গিয়েছে।

Advertisement

শমীকের কথায়, “বোলপুরে আমাদের প্রার্থীদের একটি ঘরের মধ্যে বন্দি করে রাখা হয়। পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তা এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানানোর পরেও তাঁদের উদ্ধার করতে পুলিশ না পাঠিয়ে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে পাঠানো হয়। পুলিশের সামনে আমাদের আইনজীবী নেতা পার্থসারথি ভট্টাচার্যকে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁর শরীরে সবুজ আবির মাখিয়ে দেয়। সিউড়িতে প্রার্থীদের বাড়ি গিয়ে তাঁদের স্ত্রীদের খোলা রিভলবার নিয়ে ভয় দেখানো হয়।” বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর উপরে আক্রমণের ঘটনাও উল্লেখ করেন শমীক।

বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল এবং শিলিগুড়ি— এই চার পুরনিগমে ভোট পরশু, শনিবার। শমীকের অভিযোগ, ভোটের দিন অশান্তি পাকাতে শিলিগুড়িতে বহু হোটেল এবং গেস্ট হাউসে বহিরাগতদের এনে রাখা হয়েছে।

যদিও যাবতীয় অভিযোগের পরে শমীকের দাবি, “এই বল্গাহীন সন্ত্রাস এবং পুলিশ, কমিশনের অসহযোগিতা সত্ত্বেও আমরা ভোটে লড়ছি। বিজেপি অন্তর্কলহে দীর্ণ এবং প্রার্থী পাচ্ছে না বলে যে প্রচার হচ্ছিল, বাস্তব চিত্র তেমন নয়।” দেরি করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার ফলেই কি তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে সমস্যা হয়েছে? শমীকের জবাব, “একেবারেই তা নয়। যাঁরা প্রার্থী হবেন, তাঁরা জানতেন। তাঁদের নথিপত্র সব তৈরি থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন দিতে না দিলে বিজেপি কী করতে পারে?”

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “কোথাও বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটলে তা অনভিপ্রেত। তবে যে সব জায়গায় এই অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে বিজেপির প্রার্থী দেওয়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি আছে কি? আসলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় থাকতে না পেরে বিরোধীরা এই রকম আওয়াজ তুলে সরে যাওয়ার রাস্তা নিয়েছে। আমরা উন্নয়ন-নির্ভর নির্বাচন করতে চাই। কলকাতার মানুষ রায় দিয়েছেন।
অন্য পুরসভাতেও সেই ফলেরই প্রতিফলন হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement