(বাঁ দিক থেকে) রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরি। ফাইল চিত্র।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার হাই কোর্টে গেলেন বিরোধীরা। এ বার তাঁদের অভিযোগ, কমিশন আদালতের অবমাননা করেছে। রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার জন্য শনিবারের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনানোর ব্যবস্থা পাকা করতে বলেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নির্দেশের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা কার্যকর করা হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সোমবার সে কথাই জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরি ওরফে ডালু। প্রধান বিচারপতি সেই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, কমিশন যে হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করেনি, তা সংবাদপত্র মারফত জানতে পেরেছেন তিনিও।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় অশান্তির অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। সেই সব অভিযোগের আবহেই কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যের সমস্ত জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ভোট করাতে হবে। বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশ দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করতে হবে তাদের। শনিবার সেই নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হয়েছে। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন রবিবার পর্যন্ত সেই নির্দেশ পালন করেনি। বরং সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানায়, হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তা কার্যকর করা সম্ভব নয়। কারণ, ভোটে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে রাজ্য। এ ব্যাপারে অনুরোধ করা তাদের কাজ নয়। ফলে রাজ্যের নিস্পৃহতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আবার হাই কোর্টে গিয়েছেন বিরোধীরা। তাঁরা অভিযোগ করেছে, হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়ে সময় বেঁধে দেওয়ার পরও কমিশন পদক্ষেপ করেনি। এতে আদতে আদালতের অবমাননা করা হয়েছে।
বিজেপির তরফে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর আইনজীবী বলেন, ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নির্দেশ কার্যকর করেনি কমিশন। অন্য দিকে, কংগ্রেস জানায়, মনোনয়ন পর্ব থেকেই সিসিটিভি ক্যামেরা নজিরদারিতে করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কমিশন তা করেনি। দু’টি বিষয়েই দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করে বিজেপি এবং কংগ্রেস। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম তাঁদের মামলার অনুমতি দিলেও দ্রুত শুনানির আর্জি মঞ্জুর করেননি। আদালতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘নির্দেশ কার্যকর হয়নি, তা সংবাদপত্র মারফত জেনেছি। আপনারা মামলা করতে চাইলে অবশ্যই করুন। কিন্তু দ্রুত শুনতে হবে কেন? যে নিয়মে মামলার আর্জি করার পর শুনানি হয়, তা মেনেই শুনানি হবে।’’ আদালত সূত্রে খবর বুধবারই ওই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।