মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিমল গুরুং। ফাইল চিত্র।
গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর আওতাধীন এলাকায় শিক্ষক নিয়োগের দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং। গত ২১ জুন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, শীঘ্রই রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণাকে হাতিয়ার করেই তাঁকে এই চিঠিটি লিখেছেন গুরুং। চিঠির শুরুতেই, জিটিএ এলাকায় প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। সঙ্গে লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে বহু শিক্ষিত মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। মেধার ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী যে শিক্ষক নিয়োগের কথা বলেছেন তাতে নিয়োগ প্রক্রিয়াও স্বচ্ছ হবে বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন গুরুং।
জিটিএ-র আওতায় থাকা এলাকায় শিক্ষক নিয়োগের গত ২০ বছরের কথা চিঠিতে তুলে ধরেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শেষ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল ২০১২ সালে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইন্টারভিউ হয়েছিল ২০০২ সালে। সেই প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত মাত্র ১২৩ জন শিক্ষক ২০১৮ সালে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ হয়েছিলেন। চিঠিতে গুরুং দাবি করেছেন, পাহাড়ে শুধুমাত্র প্রাথমিক শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে ৬৫৩টি। উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া এখনও শুরু করা যায়নি বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। তাই চিঠির শেষ ভাগে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জিটিএ এলাকাতেও শামিল করার দাবি জানিয়েছেন গুরুং। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আশা করছি, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জিটিএ অধীনস্থ এলাকা সরকারি উদ্যোগ থেকে বঞ্চিত হবে না।’
গত বছরের অক্টোবরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থা জানিয়ে বিজেপি-র সঙ্গ ত্যাগ করেছেন গুরুং। সেই সময় কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করে বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হোক বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কেউই প্রতিশ্রুতি রাখেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব পূরণ করেছেন। আজ থেকে এনডিএ ছাড়ছি। ২০২১ সালের নির্বাচনে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোটে লড়াই করব। বিজেপি-কে মোক্ষম জবাব দেব।’’ বিধানসভা ভোটে নিজের প্রার্থী দাঁড় করিয়েও পাহাড়ের আসনগুলিতে সুবিধা করতে পারেননি গুরুং। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুজোর মধ্যেই ১৪ হাজার আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ করা হবে৷ প্রাইমারিতেও আরও সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হবে৷ পুজোর পর মার্চ মাসের মধ্যে প্রাইমারিতে আরও সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে ৷ সব মিলিয়ে প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জিটিএ-র জন্য অংশীদারিত্ব চেয়ে পাহাড়ের রাজনীতিতে নিজের রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে চাইছেন গুরুং, এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।