—নিজস্ব চিত্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভোপালের সাকেতনগরে আসবেন আকাঙ্ক্ষা শর্মা। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি সেখানে গেলে পরিবারের সঙ্গে তাঁর দেখা করিয়ে দেবে এমনই আশ্বাস দিয়েছিল উদয়ন দাস। আকাঙ্ক্ষার পরিবারের থেকে এ কথা জেনে পুলিশের অনুমান, সপরিবার শিবেন্দ্র শর্মাকেও খুনের মতলবে ছিল উদয়ন।
শুক্রবার এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘শিবেন্দ্রবাবুরা খুন হলে আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার কেউ থাকত না। তাই এই মতলব বলে মনে হচ্ছে।’’
গত বছর ৩০ জুন বাঁকুড়ার বাড়ি ছাড়ার পরে ‘মেসেজ’ বা ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ অনুরোধ করেও আকাঙ্ক্ষার নিজস্বী দেখতে (সেলফি) বা ফোনে তাঁর গলা শুনতে পাননি শর্মারা। এ দিকে, অক্টোবর মাসে উদয়ন যখন বাঁকুড়ায় আকাঙ্ক্ষার বাড়িতে দু’রাত কাটায় তখনই আশ্বাস দিয়েছিল, দিল্লি গেলে সে মার্কিন ভিসা জোগাড় করে দেবে যাতে তাঁরা আকাঙ্ক্ষার কাছে যেতে পারেন। দিল্লি গিয়ে শর্মারা উদয়নের হদিস পাননি। উল্টে আকাঙ্ক্ষার ‘মেসেজ’ এসেছিল, ‘উদয়ন খুন হয়েছে’।
পরে বাঁকুড়া পুলিশ ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখে জানতে পারে আকাঙ্ক্ষার মোবাইল রয়েছে সাকেতনগরে, তখন সেখানে যান শিবেন্দ্রবাবুরা। সেখানেই তাঁরা জানতে পারেন, উদয়ন বেঁচে। যদিও তার দেখা পাননি তাঁরা। এর পরেই শর্মাদের ভোপালে আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে দেখা করানোর প্রস্তাব দিয়ে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ করেছিল উদয়ন। কিন্তু ভরসা রাখতে না পেরে শর্মারা ভোপালে যাননি।
উদয়নের বাবা বীরেন্দ্র দাস এবং মা ইন্দ্রাণী দাসের খুন হওয়ার খবর জেনে শিবেন্দ্রবাবু বলেছিলেন, ‘‘মনে হয়, অক্টোবরে আমাদের খুন করতেই উদয়ন বাঁকুড়ায় এসেছিল। কিন্তু সুযোগ পায়নি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে জেরায় উদয়ন দাবি করে, ১৫ জুলাই আকাঙ্ক্ষার মোবাইলে কারও ফোন আসে। উদয়ন ‘কল-লিস্ট’ ঘেঁটে দেখে, ফোনটি আকাঙ্ক্ষার ‘প্রাক্তন প্রেমিকের’। এ নিয়ে বচসার পরেই সে আকাঙ্ক্ষাকে খুন করে। বাঁকুড়ার এসপি সুখেন্দু হিরা অবশ্য বলেন, ‘‘উদয়ন যা বলছে, তা পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য ঠেকছে না।’’ ‘কল-রেকর্ড’ ঘেঁটেও পরিবার ছাড়া কোনও নম্বর মেলেনি, যার সঙ্গে আকাঙ্ক্ষার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, উদয়ন তাদের জানিয়েছে, ২৭ জুন ভোপালের একটি কালীমন্দিরে সে আকাঙ্ক্ষাকে বিয়ে করে। কিন্তু আকাঙ্ক্ষাকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে পারছিল না। ১২ জুলাই আকাঙ্ক্ষা বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটেন। উদয়ন জানতে পারায় অশান্তি চরমে ওঠে।