ফাইল চিত্র।
কল্যাণী এমসে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের একরাজ্য সম্পাদকের বিরুদ্ধে। জ্ঞানমোহন বসাক নামে ওই নেতার বিরুদ্ধে রবিবার সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সাত জন।
এমসে চাকরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে বিজেপির দুই সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও সুভাষ সরকার এবং দুই বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ ও নীলাদ্রিশেখর দানার। তদন্তে নেমেছে সিআইডি।
এ বার নাম জড়াল আরএসএস-এর শ্রমিক সংগঠনের নেতারও। যাঁরা অভিযোগ করেছেন তাঁরা প্রায় সকলে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার এবং বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের ‘তত্ত্বাবধানে’ এই ‘কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা’ হয়েছে জানিয়ে প্রত্যেকের কাছে এক লাখ টাকা করে চাওয়া হয় বলে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, “বিজেপি যেখানে কিছুটা সংগঠন করতে পেরেছে সেখানেই এই রকম অভিযোগ সামনে এসেছে। দলের ভিতরে কামিনী-কাঞ্চনের অভিযোগ বা এমসে নিয়োগ দুর্নীতিতে বিধায়কদের বিরুদ্ধে অভিযোগ— সবই বিজেপির ভিতর থেকেই বাইরে এসেছে। বিরোধীদের অভিযোগ করতে হয়নি। যথাযথ তদন্ত হোক।”
সুভাষ সরকার অবশ্য দাবি করেন, “এ ক্ষেত্রে আমার নাম জড়িয়ে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন৷ চাকরি দেবে বলে কেউ টাকা তুলে থাকলে তদন্ত করে সেই ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।” শান্তনু ঠাকুরকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি, মেসেজেরও জবাব দেননি।
হ্যান্ডলুম ডে উপলক্ষে রবিবার নদিয়ার ফুলিয়ায় এক কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের (বিএমএস) রাজ্য সভাপতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়। তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগে সাত স্বাক্ষরকারী জানান, বছর আড়াই আগে জ্ঞানমোহন তাঁদের জানিয়েছিলেন যে এমসে লোক নেওয়া হবে।
সেখানে বিএমএস-এরও ‘কোটা’ থাকবে। তালিকায় নাম তুলতে প্রাথমিক ভাবে ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। ওই টাকা সংগঠনের তহবিলে জমা থাকবে, তার জন্য রসিদও দেওয়া হবে। পরে চাকরি হলে বাকি ৭০ হাজার টাকা দিতে হবে। অভিযোগকারীদের এক জন বিজয় সরকার বলেন, “৩০ হাজার টাকার জন্য কোনও রসিদ দেওয়া হয়নি। পরে চাকরিও হয়নি।”
সম্প্রতি এমসে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানার পর যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা জ্ঞানমোহনেরসঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, জ্ঞানমোহন তাঁদের জানান, অস্থায়ী পদে নিয়োগ হচ্ছে,তাঁদের স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হবে। এর পর থেকেই তাঁদের তিনি এড়িয়ে চলছেন। এ দিন একাধিক বারফোন করা হলেও তা ধরেননি জ্ঞানমোহন। জবাব মেলেনি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও।
বিএমএস-এর রাজ্য সভাপতি শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের তহবিলে এ রকম কোনও টাকা নেওয়ার ব্যাপার নেই, চাকরি দেওয়ার কোটাও নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানাব।”