ফাইল চিত্র
রাজ্যের শিল্প মানচিত্রের অন্যতম প্রধান বিনিয়োগ এসেছিল তাঁর হাত ধরে। দেশের পেট্রো-রসায়ন শিল্পের সেই অগ্রণী সংস্থা হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস শিল্প দুনিয়ায় ক্রমশ অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু শুধু শিল্প ক্ষেত্রেই লগ্নিতে আটকে থাকতে নারাজ দ্য চ্যাটার্জি গোষ্ঠী-র (টিসিজি) কর্ণধার তথা অনাবাসী বাঙালি শিল্পপতি পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। বরং শিল্প ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য জরুরি মেধাসম্পদ তৈরিতেও বিনিয়োগে আগ্রহী তিনি। সে ক্ষেত্রে ফের তাঁর কাছে অগ্রাধিকার পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আধুনিক শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশেষ কেন্দ্র— টিসিজি সেন্টারস ফর রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন ইন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (টিজিসি ক্রেস্ট) গড়েছেন তিনি। এ বার রাজ্যে সার্বিক ভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের (সূত্রের খবর, কমপক্ষে ২০০০ কোটি) বার্তা দিলেন তিনি। বুধবার বেঙ্গল গ্লোবাল বিজ়নেস সামিটে জানালেন, আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার জন্যও রাজ্যের কাছে অনুমোদন চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
বিনিয়োগের পাশাপাশি শিক্ষা ও শিল্পের মেলবন্ধন এবং সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গী হতে অনেক শিল্প সংস্থাই (ভারতে টাটা গোষ্ঠী-সহ অনেকেই) আলাদা ভাবে গবেষণা ক্ষেত্রে পা রাখে। সেই ভাবনাকেই আরও সুদূরপ্রসারী রূপ দিতে সেক্টর ফাইভে ওই অলাভনজক সংস্থা টিসিজি ক্রেস্ট গড়েছে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। সেখানে তৈরি হয়েছে চারটি গবেষণাকেন্দ্র। বুধবার রাজারহাটের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারের প্রাঙ্গণে সাংবাদিক বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কথা জানান পূর্ণেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘মেধাই তৈরি করে সম্পদ। শুধু শিল্প ক্ষেত্রই নয়, সামাজিক উন্নয়নেও জরুরি মেধার বিকাশ। সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে কাজ করছে টিসিজি ক্রেস্ট।’’
এ বার আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়াই টিসিজি-র লক্ষ্য। যেখানে থাকবে নিজস্ব কোয়ান্টাম কম্পিউটার-ও। টিসিজি ক্রেস্ট সূত্রের খবর, আবহাওয়া সংক্রান্ত আরও নিখুঁত তথ্যের হিসাব কষার জন্য প্রয়োজন হতে পারে এ ধরনের কম্পিউটারের। যা কষতে সুপার কম্পিউটার বহু বছর সময় নিলেও কোয়ান্টাম কম্পিউটারে তা হতে পারে মাত্র কয়েক ঘণ্টাতেই। এরই সঙ্গে পূর্ণেন্দু জানান, বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার জন্য তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। কবে সেটি চালু হবে, তা একান্তভাবেই নির্ভর করছে রাজ্যের অনুমোদনের উপরে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে প্রচলিত পাঠ্যক্রমের বাইরেও আধুনিক শিক্ষা ও গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলাই তাঁদের লক্ষ্য। যেটি দেশি-বিদেশি আধুনিক উৎকর্ষ কেন্দ্রগুলির (সেন্টার ফর এক্সেলেন্স) সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবে বলে তাঁদের পরিকল্পনা।