তাপস পাল
তাঁর উচ্চারিত কয়েকটি ‘কুকথা’ রাতারাতি অখ্যাত এক গ্রামকে খবরের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিল। তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি।
তাপস পালের মৃত্যুর খবর শুনে নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় বিক্রমপুর পঞ্চায়েতের সেই চৌমুহা গ্রামের অনেকেই মঙ্গলবার বললেন, কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ ‘ভুল’ করেছিলেন এবং এত দিন পরে সেই ভুলের জন্য তাঁরা মনে তিক্ততা রাখতে চান না। তাপসকে তাঁরা ‘ক্ষমা’ করেছেন। তবে এই কথা যাঁরা বলছেন, তাঁরা সকলেই পুরুষ। গ্রামে যে ক’জন মহিলার কাছে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছে, তাঁরা অধিকাংশই এড়িয়েছেন বা কিছু বলতে চাননি।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেতার পরে চৌমুহায় গিয়ে সিপিএম নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তাপস হুমকি দিয়েছিলেন, ‘‘ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেব।’’ মোবাইলে তোলা সেই মন্তব্যের ভিডিয়ো ফুটেজ কিছু দিন পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, এর পরেই দলের স্থানীয় নেতারা ক্রমশ তাপসের পাশ থেকে সরে যেতে থাকেন। এর পরে আর কখনও চৌমুহায় যাননি তিনি, যদিও ওই কথা বলার জন্য পরে ক্ষমা চেয়েছেন। কৃষ্ণনগরের দু’বারের সাংসদ ২০১৯ সালের নির্বাচনে আর টিকিটও পাননি।
সামনাসামনি স্বীকার না-করলেও দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অনেকেই এ দিন স্বীকার করেছেন, চৌমুহায় তাপস পালের সে দিনের মন্তব্যই অভিনেতা-সাংসদের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছিল। চৌমুহার বাসিন্দা, ঘটনার সময়ে স্থানীয় বিক্রমপুর পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি আবদুল্লা শেখের কথায়, ‘‘কেউ কেউ তাঁকে উত্তেজিত করেছিল। তাতেই তিনি বেফাঁস কথা বলেছিলেন। তবে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। এর পরেও ওই গ্রাম থেকে আমরা লিড পেয়েছি।’’ নাকাশিপাড়ার ব্লক সভাপতি অশোক দত্তের দাবি, ‘‘মানুষ ওই কথা গায়ে মাখেননি।’’
এ দিন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করলে গ্রামের মহিলাদের এক জন বলেন, ‘‘এত দিন পরে আবার ও সব বিতর্কিত প্রসঙ্গ কেন আনছেন? কিছু বলতে পারব না।’’ আর এক জনের মন্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না।’’ তবে আজিয়া বিবি নামে এক জন বলেন, ‘‘অভিনেতা তাপস পালকে আমরা মনে রাখব। তিনি যা বলেছেন ভুলে যেতে চাই।’’