ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান কিনে নিজের রেকর্ড ভেঙে দিল পশ্চিমবঙ্গ। জানুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ লক্ষ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। তা ছাড়িয়ে রাজ্যের তিন লক্ষ চাষির কাছ থেকে সরকার ধান কিনেছে ১৫ লক্ষ ৩ হাজার মেট্রিক টন। এর আগে এক মাসে সহায়ক মূল্যে এত ধান কখনও কেনেনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার খাদ্যসাথী দিবসের অনুষ্ঠানে সরকারি ভাবে এ কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, বাংলার এই কর্মদক্ষতা দেখে কেন্দ্রীয় সরকারের ফুড করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই) রাজ্যের কাছ থেকে চাল কিনতে চাইছে।
মন্ত্রী জানান, দিন কয়েক আগে এফসিআইয়ের পক্ষ থেকে চিঠি এসেছে খাদ্য দফতরে। তাতে বলা হয়েছে কেরল, ঝাড়খণ্ড এবং তামিলনাডুতে মিড ডে মিলের চাল জোগান দিতে চাল দরকার। পশ্চিমবঙ্গ তা দিতে পারে। মন্ত্রীর দাবি, রাজ্য খাদ্য দফতর ধান কেনায় যে অন্য রাজ্যের থেকে এগিয়ে, কেন্দ্রের পাঠানো ওই চিঠি থেকেই তা পরিষ্কার। তবে এখনই রাজ্য এফসিআইকে চাল বিক্রি করবে কি না তা ঠিক হয়নি। তিনি জানান, আগামিকাল, সোমবার বিষয়টি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত মিললে তবেই এই ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার এ বছর ধান কেনার জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঠিক করে কুইন্টাল প্রতি ১,৫৫০ টাকা। রাজ্যের নিজস্ব ক্রয়কেন্দ্র ছাড়া কোনও চাষি ধান কিনে সরকারকে দিলে কুইন্টাল প্রতি বাড়তি ২০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। দফতরের এক অফিসার জানান, চলতি বছরে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫২ লক্ষ মেট্রিক টন।
একই সঙ্গে মন্ত্রী জানান, ধানচাষিদের স্বার্থ পূরণের পাশাপাশি রাজ্যের পাটচাষিদের বিষয়েও যথেষ্ট সজাগ রয়েছে রাজ্য সরকার। আর সেই কারণেই ধান থেকে সংগৃহীত চাল মজুত করার জন্য রাজ্য সরকার জুট করপোরেশন অব ইন্ডিয়া থেকে ২৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ কোটি ২৫ লক্ষ চটের বস্তা কিনছে। তাতে বাংলার ৭৬টি জুটমিলের প্রায় ২ লক্ষ শ্রমিক উপকৃত হবেন। যা থেকে নতুন দিশা পেতে পারে বাংলার ৩২ লক্ষ পাটচাষি পরিবারও। জ্যোতিপ্রিয়র দাবি, চাল সংগ্রহে সরকার এখন অনেকটাই স্বচ্ছন্দ। গণবণ্টন ব্যবস্থায় চাল সরবরাহ করার পরেও বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন চাল মজুত থাকবে খাদ্য দফতরের ভাণ্ডারে।