বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে নয়। কিন্তু, পঞ্চায়েত ভোট এলেই জয়ের ব্যবধান মাত্র ১!
২০০৮, ২০১৩ এবং ২০১৮—তিন তিনটি পঞ্চায়েত নির্বাচনে এমনই ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের ভাটাকুল গ্রামে। এলাকারই লোকজন মজা করে বলছেন, এক ভোটে জয়ের এ বার হ্যাটট্রিক হল।
বলগনা গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ভাটাকুল সংসদটি গঠিত ৭৮ ও ৭৯ নম্বর বুথ নিয়ে। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল বেরনোর পর দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল প্রার্থী ঝুমা পাকড়ে ঝুলিতে পড়েছে ৫৩২টি ভোট। বিজেপির সখী রানা পেয়েছেন ৫৩১টি। একই ভাবে ২০১৩ সালে জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থী বুলা পাল। ১ ভোটে হারিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থীকে। বুলা পান ৩৬১টি ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী ৩৬০। ২০০৮ সালে ভাটাকুলের এই আসন থেকে সিপিএম জয়ী হয়েছিল ১ ভোটেই।
এ বার তৃণমূল জিতলেও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৭৮ নম্বর বুথে সিপিএমের বামাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ২৭৮টি ভোট পেয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূলের সুভাষ মণ্ডলের (বর্তমান বিধায়ক) বাক্সে পড়েছিল ১৭৮টি ভোট। ৭৯ নম্বর বুথে সিপিএম ২৫১টি ভোট পেয়েছিল। তৃণমূল পেয়েছিল ২০৭টি ভোট। পঞ্চায়েত ভোট এলেই কেন ১ ভোটের ব্যবধান হয়, তার কোনও ব্যাখ্যা সে ভাবে নেই এলাকার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কাছে।
তবে, গতবারের জয়ী নির্দল বুলাদেবী মনে করেন, “দল না ব্যক্তি—ভোটারদের মধ্যে এই টানাপড়েন হয় এখানে। সে জন্য পঞ্চায়েতের ভোটে এ রকম ফল হচ্ছে।” সদ্য জয়ী ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য, ভাটকুলের বাসিন্দা প্রদ্যুৎ পালের ব্যাখ্যা, “বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে মানুষ মূলত দল দেখে ভোট দেন। পঞ্চায়েতে নির্বাচনে প্রার্থীও ‘ফ্যাক্টর’। সে জন্য গতবার নির্দল প্রার্থী ব্যক্তিগত প্রভাবে সিপিএমকে হারিয়েছিল। আর এ বার আমাদের দলের প্রার্থীর প্রভাব কাজ করেছে।” প্রদ্যুৎবাবু অবশ্য ওই দুই বুথ থেকেই দু’শোরও বেশি ভোটে জিতেছেন।
এক ভোটে হেরে হতাশ বিজেপি। দলের নেতা স্বপন গোস্বামীর কথায়, “এই আসনে আমাদের জয় নিশ্চিত বলেই ধরেছিলাম। কিন্ত সেই একের গেরোয় হারলাম।”