স্ত্রী পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী। সেই ‘অপরাধে’ স্বামীর অটো চালানো বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে সরগরম শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রঘুনাথপুর। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য জুড়ে সিপিএমের হাত থেকে একের পর এক পঞ্চায়েত দখল করেছিল তৃণমূল। কিন্তু রঘুনাথপুর পঞ্চায়েতে ছিল অন্য ছবি। তৃণমূলের হাতে থাকা এই পঞ্চায়েত সিপিএম দখল করে। এ বার পঞ্চায়েতের ২ নম্বর সংসদে সিপিএমের টিকিটে দাঁড়িয়েছেন মৌসুমী নাখোদা। তাঁর স্বামী প্রমোদ উত্তরপাড়া স্টেশন-ডানকুনি চৌমাথা রুটে অটো চালান। কিন্তু সোমবার থেকে তাঁর কাজ বন্ধ।
প্রমোদের অভিযোগ, ‘‘আমি নাকি অটো-চালক সংগঠনের বিরোধিতা করেছি! তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য আমাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরের অটো চালিয়ে খাই। এখন কেউ অটো দিচ্ছেন না। আমার পাঁচ বছরের মেয়ে অসুস্থ। কী করব বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্ত্রী ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে আমার কী করার আছে?’’ মৌসুমীর অভিযোগ, ‘‘বিরোধীকে লড়াই থেকে সরাতে এই পন্থা নিয়েছে তৃণমূল। মনোনয়নপর্বে ওরা সিপিএমের হয়ে দাঁড়াতে বারণ করেছিল। ওদের টিকিট দিতে চেয়েছিল। রাজি হইনি।’’
প্রতিবাদে সিপিএমের তরফে পোস্টার সাঁটা হয়েছে। জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তৃণমূল দেখছে, আমাদের প্রার্থীরা ময়দান ছাড়তে চাইছেন না। তাই এই কায়দায় রোজগার বন্ধ করছে।’’
তৃণমূল প্রভাবিত ‘মাখলা-ডানকুনি অটোরিকশা অপারেটার্স ইউনিয়ন’-এর সভাপতি তথা উত্তরপাড়া পুরসভার কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ ঘোষের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, ওই সংগঠনের নেতাদের দাবি, প্রমোদ যাত্রীদের থেকে ভাড়া বেশি নিচ্ছিলেন। দুর্ব্যবহারের অভিযোগও ছিল। উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রবীর ঘোষাল বলেন, ‘‘ওই সংগঠনের লোকজন জানিয়েছেন, সংগঠনের ভিতরে ওই যুবক গোলমাল করায় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের যোগ নেই। অসত্য অভিযোগ।’’ প্রমোদ বলেন, ‘‘১৯৯২ সাল থেকে অটো চালাচ্ছি। এত দিন তো অভিযোগ ওঠেনি। কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি না।’’