পঞ্চায়েত ভোটের প্রেক্ষিতে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে সরব কংগ্রেস-বিজেপির মতো বিরোধীরা। দিন কয়েক আগেই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা তলানিতে ঠেকেছে, এই দাবি তুলে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের কথা শোনা গিয়েছিল রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখে। রাজ্যে ৩৬৫ ধারা জারির কথা শোনা গিয়েছে কংগ্রেসের গলাতেও। এ বার সেই ৩৬৫ ধারা জারি বিষয়টি শোনা গেল সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচন কমিশনার অসহায় ভাবে বসে আছে। এই পরিস্থিতিতে ৩৬৫ ধারার দাবি উঠলে সেটা অবশ্যই বিচার্য বিষয়।’’ পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্যে যখন চরম চাপানউতোর চলছে, সেই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস-বিজেপির পথে হেঁটে সোমনাথবাবুর মন্তব্য রাজনৈতিক ভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
বুধবার দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার শুধু রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন তাই নয়, সরব হয়েছেন গণতান্ত্রিক কাঠামোয় ক্ষমতার অপপ্রয়োগের বিষয়টি নিয়েও। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক অসুবিধার মধ্যেও মানুষ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। কিন্তু, রাজ্যের যা পরিস্থিতি তাতে জঙ্গলের অবস্থা বলে মনে হচ্ছে। ক্ষমতা দখল করতে যা ইচ্ছা তাই করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের ছিঁটেফোঁটাও নেই।’’ এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার জোর করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা, বিপদের কথা।’’
বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকাও যে সন্তোষজনক নয়, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন সোমনাথবাবু। তিনি বলেন, ‘সব থেকে বিপদজনক হয়েছে পুলিশের ভূমিকা। নির্বাচন একটা উৎসবের মতো। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই পুলিশের ভূমিকা খুবই বিপদজনক।’’ এ দিন সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই প্রবীণ এই নেতা। তাঁর মতে, ‘‘গণতন্ত্র রক্ষায় সাংবাদিকদের বিরাট ভূমিকা,আপনারা সেই দায়িত্ব পালন করুন।’’
যদিও বর্ষীয়ান এই নেতার মন্তব্যের পরই পাল্টা আক্রমণের পথে গিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘উনি যে দলে ছিলেন সেখানেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি।’’