একটা কুল কি খোয়াতেই হবে? দু’কুল রাখা যাবে না কেন?
এই প্রশ্ন, এমনই সংশয়-আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী শিবিরের অনেক শিক্ষক-প্রার্থী। হিংসা-হানাহানির মধ্যেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের প্রশ্ন, ভোটে জিতলেও তাঁরা আদৌ নির্বাচিত সদস্য-পদে থাকতে পারবেন কি? যদি কোনও মতে থেকেও যান, বাঁচাতে পারবেন কি স্কুলের চাকরিটা?
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের একটি নির্দেশের জেরেই এই আশঙ্কা চেপে বসেছে। পঞ্চায়েতে প্রার্থীদের এই মর্মে সম্মতি জানাতে হয়েছে যে, তিনি যে-সরকারি দফতরে চাকরি করেন, ভোটে জেতার পরে সেই দফতর যদি চাকরি আর পঞ্চায়েত-পদ দু’টিই চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি না-দেয়, তা হলে হয় তাঁকে চাকরিতে ইস্তফা দিতে হবে বা ছাড়তে হবে জিতে আসা পদ।
এখন স্কুলগুলির পরিচালন সমিতির মাথায় রয়েছেন সরকার মনোনীত সভাপতিরা। তাঁদের সকলেই শাসক দলের। সেই সব সভাপতির কাছ থেকে শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি বিরোধী প্রার্থীরা পাবেন কি না, তা নিয়েই আশঙ্কা প্রবল হয়েছে। জীবিকার তাগিদে চাকরি ছাড়া মুশকিল। আবার স্কুলের কাজ চালিয়ে যেতে হলে পঞ্চায়েতে জিতেও পদ ছাড়তে হয়। কোন কুল রাখবেন তাঁরা?
সিপিআইয়ের শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘শুধু মনোনয়ন নিয়ে শাসক দল যে-কাণ্ড করছে, এর পরে বিরোধী শিক্ষকদের কেউ জিতলে তাঁদের অনুমতি (চাকরি চালিয়ে যাওয়ার) দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’’ বিরোধীদের আশঙ্কা, পঞ্চায়েতের সর্বত্র দাপট অটুট রাখার তাগিদেই শাসক দল জিতে আসা প্রতিপক্ষকে মুছে ফেলতে চাইবে। ‘‘সব পঞ্চায়েত বিরোধী-শূন্য করে দেওয়ার জন্য শাসক দলের প্রাণপণ চেষ্টাই নির্বাচনে লড়তে আগ্রহী শিক্ষকদের শঙ্কিত করে তুলেছে,’’ বললেন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য।