জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে তৃণমূলের গোঁজ ও নির্দল কাঁটা প্রায় পরিষ্কার। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতে তা সে ভাবে করে উঠতে পারেনি শাসক দল। এই স্তরে অতিরিক্ত প্রার্থীর কম-বেশি ৩৫ শতাংশের বেশিই রয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ১৪ হাজার অতিরিক্ত প্রার্থী ছিল তৃণমূলের। তার মধ্যে সাড়ে নয় হাজার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দল অবশ্য চিন্তায় রয়েছে এখনও লড়াইয়ে থাকা ‘সতীর্থ’দের নিয়ে।
ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের অন্যতম মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়ায় টিকিটের চাহিদা। দফায় দফায় আলোচনা করেও তা ঠেকানো যায়নি। বরং তিন স্তরেই বড় সংখ্যায় এই অতিরিক্ত মনোনয়ন জমা দেন দলের নেতা-কর্মীরা। সেই অতিরিক্ত মনোয়ন প্রত্যাহারে রাজ্য নেতৃত্ব সর্বশক্তিতে নামলেও পুরোপুরি তা করা যায়নি। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৬৫ শতাংশ অতিরিক্ত গোঁজ বা নির্দল হিসাবে সরে গিয়েছেন। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ভোট পর্যন্ত আরও অনেকেই উন্নয়নের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াবেন।’’
প্রকাশ্যে অবশ্য গোঁজ বা নির্দলের সমস্যাকে উদ্বেগজনক বলে মানতে চাইছে না তৃণমূল। জেলা পরিষদ প্রায় ‘কাঁটামুক্ত’। পঞ্চায়েত সমিতির হিসাব অনুযায়ী, তৃণমূলের অতিরিক্ত প্রার্থী ছিল দু হাজার ৬৬২। এই স্তরেও দলের রাজ্য ও জেলা নেতারা আলাপ আলোচনা করে দু হাজার ৪০০ প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন। এই দুই স্তরের কিছু ক্ষেত্রে দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে হুঁশিয়ারি দিতে হয়েছে নেতৃত্বকে। সমস্যা রয়ে গিয়েছে একেবারে নীচেরতলায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮ হাজার আসনে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ৫৮ হাজারের বেশি প্রার্থী। একেবারে নীচেরতলায় দলের এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন দলের মহাসচিবও। তবে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতে সকলেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। সে কারণে এখনও কিছু প্রার্থী রয়ে গেছেন। ভোটের আগে তাঁরা দলের সরকারি প্রার্থীর জন্যই ভোট চাইবেন।’