সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। শুধু আলোচনাই নয়, সেই আলোচনা অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তাঁর আরও নির্দেশ, ‘অর্থবহ আলোচনার’ পর গৃহীত ব্যবস্থা নিয়েও কমিশনকে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর করা মামলায় জেলার পুলিশ সুপারদের সব দলের প্রার্থীরা যাতে মনোনয়ন পেশ করতে পারেন, তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই বেঞ্চেই আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছেন অধীরবাবু। সেই কারণেই বিচারপতি তালুকদার কমিশনকে ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট দিতে বলেছেন বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। পিডিএস নেতা সমীর পুততুন্ডের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে ওই রায় দেন বিচারপতি তালুকদার। একই সঙ্গে কমিশনকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ভোট নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে হবে। কমিশকে তিনি এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিরোধীদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
পিডিএস আদালতে জানায়, মনোনয়ন পেশের মেয়াদ আদালতের নির্দেশে বাড়ানো হলেও সোমবার বিভিন্ন জেলায় তাঁদের প্রার্থীদের এসডিও অফিসেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে প্রার্থীদের বাধা দেওয়া হয়েছে, তার প্রমাণ বিডিও বা এসডিও অফিসের সিসিটিভি-র ফুটেজ থেকে পাওয়া যাবে বলে আদালতে জানান পিডিএস নেতা।
অভিযোগ শুনে বিচারপতি তালুকদার কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শান্ডিল্যর কাছে জানতে চান, নিরাপত্তার কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কমিশনের সচিব জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র সচিব থেকে শুরু করে ডিজি, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন পুলিশ কমিশনার সবাইকেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। তার পরেই সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ভাঙড়ের ‘হোয়াটঅ্যাপস’ মনোনয়ন বাতিল হবে না
বিজেপিও মনোনয়ন পর্বে বাধার অভিযোগ জানায়। সে সময় বিচারপতি তালুকদার কমিশনের সচিবের কাছে জানতে চান, মনোনয়ন পেশের মেয়াদ বাড়িয়ে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সচিব জানান, গোলমালের আশঙ্কা করে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ, প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়। সচিব দাবি করেন, সোমবার রাজ্য জুড়ে জেলা পরিষদে ২৬৭ জন, পঞ্চায়েত সমিতিতে ১ হাজার ৩৩৭ জন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪ হাজার ৯৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন পেশ করেছেন। তৃণমূল, বিজেপি, বহুজন সমাজ পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, ফরওয়ার্ড ব্লক-সহ অনেক রাজনৈতিক দলই মনোনয়ন জমা দিয়েছে। সচিবের বক্তব্য শুনে বিচারপতি তালুকদার জানিয়ে দেন, এই মামলায় দীর্ঘ শুনানির প্রয়োজন নেই। তিনি মনে করছেন, এ ক্ষেত্রে আদালতের হস্তক্ষেপ নিষ্প্রয়োজন।