কোর্টের স্থগিতাদেশ, ১ মে ভোট হবে কি, জল্পনা তুঙ্গে

কেউ কেউ বলছেন, শুধু মনোনয়নের জন্য এক বা দু’দিন সময় বাড়িয়ে দিতে পারে আদালত। তখন নতুন করে স্ক্রুটিনি ও প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৫৭
Share:

রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচনের উপরে আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে, এমন ঘটনা এক কথায় বেনজির। ফলে এমন পরিস্থিতিতে কী করা হবে, তা নিয়ে কমিশন থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তা এমনকী আইনজীবীদেরও কোনও অতীত অভিজ্ঞতা নেই। এখন তাঁদের সকলের প্রশ্ন, এ বার কী হবে?

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মহলগুলির প্রায় সকলের মতে, পঞ্চায়েত ভোট প্রসঙ্গে কমিশনের আইনি ক্ষমতা এবং ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত আইনকেই এত কাল বেদের মতো মনে করা হত। কিন্তু হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে সেই পরিস্থিতি পুরোটাই বদলে গিয়েছে। এবং বিষয়টি নিয়ে দলঘোলা যে সহজে শেষ হবে না, সে ব্যাপারেও সকলেই একমত।

কারণ, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আজ, শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার কথা ভাবছে‌ তৃণমূল। সেখানে রায় যার পক্ষেই যাক না কেন, অন্য পক্ষ যে সুপ্রিম কোর্টে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Advertisement

আর যদি ডিভিশন বেঞ্চে মামলা না হয়, তা হলে অপেক্ষা করতে হবে সোমবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের রায়ের জন্য। কমিশন এবং নবান্নের কারও কারও মতে, আদালত কমিশনের রিপোর্ট দেখে তাদের নতুন করে নির্ঘণ্ট প্রকাশের নির্দেশ দিতে পারে। প্রশ্ন হল, তাতে বিরোধীরা খুশি হলেও রাজ্য প্রশাসন এবং শাসক দল মানবে কি? সে ক্ষেত্রে তারা শীর্ষ আদালতে যেতে পারে। আবার আদালত চলতি নির্ঘণ্টেই ভোট করতে বললে বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন।

আরও পড়ুন: ভোট প্রক্রিয়া স্থগিত কোর্টে

কেউ কেউ বলছেন, শুধু মনোনয়নের জন্য এক বা দু’দিন সময় বাড়িয়ে দিতে পারে আদালত। তখন নতুন করে স্ক্রুটিনি ও প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে।

পঞ্চায়েত নির্বাচনী আইন অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকে ভোটগ্রহণের দিনের মধ্যে ন্যূনতম ২১ দিন এবং সর্বোচ্চ ৩৫ দিন সময় রাখতে হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরে প্রচারের জন্য কত দিন সময় দিতে হবে, সে ব্যাপারে আইনে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। তবে সাধারণ রীতি হল, প্রচারের জন্য দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এখন মনোনয়নের সময় বাড়ালে ১ মে-র ভোটের জন্য সেই সময় পাওয়া যাবে না। কমিশন ওই দিনে ভোট করাতে অনড় থাকলে ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বিরোধী দলগুলি।

অনেকের মতে, প্রথম দফার ভোট ১ মে সম্ভব হতে পারে, যদি আদালত কমিশনের রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়ে তার নিজের জারি করা দু’টি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। তখন ১৬ বা ১৭ তারিখ মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরে ভোটের আগে ১৩-১৪ দিন সময় থাকবে। কিন্তু সেটা এক প্রকার অসম্ভব বলেই মনে করছেন প্রশাসনের আর একটি পক্ষ। কারণ, আদালত বিরোধীদের মনোনয়নের সুযোগ না দিয়ে স্থগিতাদেশ সরালে তা অনেকাংশে ‘সেল্ফ ডিফিটিং অর্ডার’ বলে মনে করা হতে পারে।

এবং সে ক্ষেত্রেও উচ্চতর আদালতে যাওয়ার দরজা খুলে যাবে। যার অর্থ আরও সময় লাগা। ফলে সব মিলিয়ে এখন যা পরিস্থিতি তাতে ১ মে প্রথম দফায় ১২টি জেলায় ভোটের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement